অসুস্থ মাকে দেখতে গিয়ে ঈদের রাতে হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক তরুণী (১২)। ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের দিন (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বাথরুমে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেছেন তরুণীর বাবা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মাছুম (২০) নামে অভিযুক্ত যুবক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামের মোমতাজ মিয়ার ছেলে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মেয়েটির বাবা বুধবার রাতে থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে আবারও অসৎ উদ্দেশ্যে ওই যুবক মেডিকেল এলাকায় ঘুরতে গেলে তাকে আটক করা হয়। পরে তার ছবি তুলে মেয়েটিকে দেখালে সে শনাক্ত করে। সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণেও এর সত্যতা পাওয়া যায়।
হাসপাতাল ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল থেকে তরুণীটির মা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। ঈদের দিন বাবার সঙ্গে ১২ বছর বয়সী মেয়েটি হাসপাতালে গিয়েছিল মাকে দেখতে। রাতে ওয়ার্ডের বাইরে অবস্থান করার সময় অপরিচিত এক যুবক তাকে ফুসলিয়ে নিচতলার বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এক যুবক মেয়েটিকে ফুসলিয়ে হাসপাতালের চারতলা থেকে নিচতলার একটি বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। তিনি আরও জানান, নিচতলার এই জায়গাটা আউটডোর হওয়ায় রাতে তালাবদ্ধ থাকে। ফলে নিচতলা থেকে সরাসরি সেখানে প্রবেশ করার সুযোগ নেই। তবে উপর থেকে ফায়ার এক্সিটের একটি সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশ করেছে। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতাল গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সিসিটিভির ফুটেজও দেখেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, নিচতলার একটি ফুটেজে দেখা গেছে, অভিযুক্ত যুবক মেয়েটিকে সিঁড়ির কোণায় নেওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু সে জোরাজুরি করছে।
মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তার মা হাসপাতালের ৪র্থ তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ডাক্তার যখন ওয়ার্ড পরিদর্শনে আসেন, তখন রোগীর সাথে থাকা অতিরিক্ত লোকজনকে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওয়ার্ডের ভেতরে তখন তার বাবা ছিলেন।
মেয়েটি ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষারত অবস্থায় অপরিচিত এক যুবক তাকে ফুসলিয়ে নিচতলায় নিয়ে যায়। নিচতলায় যাওয়ার পর যুবকের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে মেয়েটি দৌড়ে চলে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু যুবকটি তার মুখ চেপে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাথরুমে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণ করে। ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসক বের হয়ে যাওয়ার পর তার বাবা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে মেয়েটির ডাক-চিৎকারে নিচতলা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।