মাদারীপুরের কালকিনিতে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার দীর্ঘ একমাস ১১দিন পর স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নিহতের স্ত্রী রুবি বেগম (২৩)। ঘটনাটি ঘটেছে কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের পূর্ব আলিপুর গ্রামে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের পূর্ব আলিপুর গ্রামের মান্নান কাজীর ছেলে নাজিমুদ্দিন কাজীর (২৫) সঙ্গে একই এলাকার কামাল সিকদারের মেয়ে রুবি বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু গত ২১ জুন রাতে স্বামী নাজিমুদ্দিন স্ট্রোক করে মারা যায় বলে এলাকায় প্রচার করেন স্ত্রী রুবি বেগম। করোনার প্রকোপের কারণে তড়িঘড়ি করে তার লাশ দাফন করা হয়। নিহতের বাবা-মা নেই। তবে নিহতের অন্য আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার মানুয়ের সন্দেহ হয়। তাদের ধারণা, হত্যা করা হয়েছে নাজিমুদ্দিনকে।
এদিকে, গত শনিবার (৩১ জুলাই) নাজিমুদ্দিনের ফুফু মতি বেগম থানায় মামলা করার জন্য গেলে কালকিনি থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদের মাদারীপুর কোর্টে গিয়ে মামলা করতে বলেন। পরে গতকাল রবিবার (১ আগস্ট) বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর তোপের মুখে এ হত্যার দায় স্বীকার করেন রুবি বেগম। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেহানা কালকিনি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ রবিবার সন্ধ্যার পরে ঘটনাস্থালে গিয়ে নিহতের স্ত্রী রুবি বেগমকে আটক করে।
রুবি বেগম বলেন, ‘আলিপুর মোল্লারহাট বাজারের ওষুধের দোকানের চিকিৎসক আব্দুল আলির কাছ থেকে ঘুমের ওষুধ এনে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নাজিমুদ্দিনকে খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করা হয়।’ কিন্তু কেন হত্যা করা হয় সে ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য জানা যায়নি।
নিহতের ভাই নাইম ও ফুফু মতি বেগম বলেন, ‘আমাদের আগেই সন্দেহ হয়েছিল নাজিমুদ্দিন মারা যায়নি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। আমাদের মাদারীপুর কোর্টে গিয়ে মামলা দিতে বলে। পরে এলাকার লোকজন নিয়ে রুবি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রুবি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নাজিমুদ্দিনকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন।’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার রবিবার রাতে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রুবি বেগম। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়।’