কুমিল্লার হোমনায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় উপজেলার কাশিপুর বাজার। এতে দুই গ্রামের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার সূত্রপাত হয়ে শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ভাষানিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর ও ওমরাবাদ গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত কয়েকজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকা ও কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিপুর পূর্বপাড়া মসজিদের পাশে ওমরাবাদ গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে অটোরিকশার চালক সাব্বির জোরে হর্ন বাজালে পথে দাঁড়ানো কাশিপুর গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সাব্বির কাশিপুর গ্রামে গিয়ে অন্যদের কাছে এই ঘটনা জানালে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাশিপুর গ্রামের লোকজন ওমরাবাদ, আর ওমরাবাদের লোকজন কাশিপুর বাজারে গেলে গেলে পথিমধ্যে তাদের আটক করে মারধর করা হয়।
শনিবার সকালে লোকজন নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান কাশিপুর বাজারে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এই সময় ওমরাবাদ ও কাশিপুর উভয় গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
খবর পেয়ে হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর, মেঘনা থানার পুলিশসহ কুমিল্লা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারের দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। হোমনা মুরাদনগর সড়কের অন্তত দুইশত মিটার রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছোট ছোট বোতলের কাঁচের টুকরো। খালি পায়ে চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে মানুষের। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওমরাবাদের লোকজন কাশিপুর বাজারে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। ধারালো দা-শাবল দিয়ে আঘাত করে অন্তত ১৬টি দোকানে ক্ষতিসাধন করে। এ সময় ওমরাবাদ গ্রামের উত্তেজিত লোকজন কাশিপুর গ্রামের আল আমিনের বসত ঘরে ঢুকে খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা শিশু আরাফাতকে টেনে হেঁচড়ে বের করে মারধর করে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।