ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে এক হাজতির স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব ও অশালীন আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই নারী যুবলীগকর্মী মামুনুর রশিদের স্ত্রী। মামুন ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়ে ঝালকাঠির কারাগারে আছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়ার স্বামী মামুনুর রশিদকে ২৯ জুলাই ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে নলছিটি থানা পুলিশ। ওই দিনই আদালত তাকে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে পাঠান। এর পর ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য বারবার জেলগেটে গেলেও দেখা করতে পারেননি।
জেলখানার এক কর্মচারীর পরামর্শে জেলার আক্তার হোসেন শেখের সরকারি নাম্বার এ (০১৭৬……৮৫১) ৩০ জুলাই ফোন করে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি জানান।
পরে জেলার স্বামী মামুনের সঙ্গে দেখার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন। জেলার নারীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর চেয়ে নেন এবং তার ব্যক্তিগত ০১৭…….৪৪ নম্বর থেকে নারীকে নিয়মিত ফোন করে কথা বলতে থাকেন। এর পর স্বামী মামুনের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নারীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিওকল দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন।
একপর্যায়ে তিনি ওই নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন।
এদিকে সেই রেকর্ডের কথাগুলো অশ্রাব্য হওয়ায় লেখা সম্ভব হয়নি।
তবে ওই নারী জেলারের অনৈতিক কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে আর স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
জেলারের সঙ্গে সব কথোপকথন মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে রাখেন ওই নারী। তিনি স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে না পেরে এবং জেলারের কুপ্রস্তাবের শিকার হয়ে ফোনরেকর্ডগুলো সাংবাদিকদের কাছে দেন। এমনকি জেলার তার স্বামী মামুনকে জেলের ভেতরে শাস্তি দেবে বলে ভয়ভীতি দেখান।
ওই নারী অভিযোগ করেন, আমি জেলারের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি। আমি আমার দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে জেলগেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থেকেছি। উনার কুপ্রস্তাবের সব রেকর্ড আমার কাছে আছে।
আমার বাচ্চারা ওদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে না পেরে দিন-রাত শুধু কান্নাকাটি করছে। আমার অসহায়ত্ব ও বিপদের সুযোগ নিয়ে জেলার আক্তার হোসেন আমার ইজ্জত নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ বলেন, অভিযোগ সত্যি না। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট।
অডিও রেকর্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন এডিটিং করা যায়।
ঝালকাঠির জেল সুপার মং এছেন বলেন, এক সেবা প্রার্থীকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় জেলারের বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তরে এক নারী অভিযোগ দিয়েছেন শুনেছি।