স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে বলি হয়েছেন ৩ সন্তানের জনক চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের আসাদুজ্জামান (৪০)। তড়িঘড়ি তাকে কবর দেওয়ায় সন্দেহের দানা বাঁধে ভাই লিটনসহ পরিবারের সদস্যদের মনে।
অবশেষে চুয়াডাঙ্গা আদালতে মামলা দায়ের করা হলে স্ত্রীর প্রেমিক নরসিংদী জেলার হুমায়ূন কবিরকে আটক করে পুলিশ। এতে মিলেছে হত্যার রহস্য ও স্বীকারোক্তি।
দাফনের প্রায় দুই বছর পরে সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদাত হোসেনের উপস্থিতিতে পুলিশ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চাঁন্দামারী গ্রামের একটি কবর থেকে লাশ উত্তোলন করেছে।
লাশ ময়না তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মহসীন আলী (পিপিএম) জানান, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাফানিয়া গ্রামের আব্দুল জলিল মাস্টারের ছেলে আসাদুজ্জামান একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ছিল। তার বিয়ে হয় হাপানিয়া গ্রামের মোনালিসা ওরফে রুপার সাথে। বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় ৩ সন্তান। রুপা স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
ওষুধ কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বসবাস করতেন আসাদুজ্জামান। ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সে হঠাৎ মারা যায়। ওই সময় স্ত্রী রুপা জানিয়েছিলেন, তার স্বামী স্ট্রোকে মারা গেছেন। পরে তার মরদেহ চুয়াডাঙ্গার ভাড়াবাড়ি থেকে নিজ গ্রাম হাফানিয়ায় নেওয়া হয় এবং গ্রামের কাছাকাছি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের চাঁন্দামারী গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দাফনের পর আসাদুজ্জামানের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হয় তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে তার প্রেমিকের সহযোগিতায় আসাদুজ্জামানকে হত্যা করা হয়েছে- এমন অভিযোগে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর তার ভাই লিটন বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা আদালতে মোনালিসা ওরফে রুপা ও তার প্রেমিক নরসিংদী জেলার হুমায়ূন কবিরকে আসামি করে মামলা করেন।
পরে পুলিশ আসামি প্রেমিক হুমায়ূন কবিরকে আটক করে। আসাদুজ্জামানকে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে আটকের পর আসামি হুমায়ূন কবির ও রুপা আদালত তাদের দোষ স্বীকার করেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে লাশের ময়না তদন্তের জন্য এদিন কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।