টাঙ্গাইলের সখীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের ভুয়াইদ মাজার পাড় এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী জয়নবের (৪৫) ওপর পাশবিক এ নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলা করেছেন। শুক্রবার (১৩ মে) রাতে মামলায় প্রধান আসামি ফজলু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, নজরুল ইসলামের ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত ৫ মে সকালে ফজলু মিয়া, মজনু মিয়া, রফিকুল ইসলাম, মজনু মিয়ার ছেলে স্বপন, জাকারিয়া, ফিরোজা বেগম, জেসমিন, জুয়েল ও সোহাগ জোরপূর্বক নজরুলের জমি দখলের চেষ্টা করে। এতে নজরুলের স্ত্রী জয়নব প্রতিবাদ করতে গেলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাকে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গৃহবধূ জয়নব বলেন, ‘জায়গা-জমি নিয়ে ওদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। জোর করে ওরা জমি দখলের চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে মজনু মিয়া তার বাহিনী নিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। ওরা সবাই মিলে আমাকে অর্ধ-বিবস্ত্র করে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পিটয়েছে। এতে আমার মাথা ফেটে যায় এবং একটি পা ভেঙে গেছে। আমি এ হামলার বিচার চাই। ‘
জয়নবের স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আপন ভাইদের সঙ্গে আমার জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না। এই সুযোগে ওরা আমার জমি দখলের চেষ্টা করে। এতে আমার স্ত্রী বাধা দিলে তাকে ব্যাপক মারধর করে। পরে ওরা আমার মায়ের থাকার ঘরটি ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় মামলা করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। ‘
নজরুলের বয়স্ক মা কোকিলা বেগম বলেন, ‘নজরুল ছাড়া কোনো ছেলেই আমার খোঁজ নেয় না। গর্ভের সন্তান হয়েও ওরা আমার থাকার ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আমি মা হয়ে ছেলেদের বিচার চাই। ‘
এ বিষয়ে সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।