রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি আজিজ মহাজনকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে ভূমিদস্যুরা। নিহত ব্যক্তি কোনাগ্রামের মৃত আজের মহাজনের ছেলে।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহমান। খাস জমির বিরোধ নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
আব্দুর রহমান জানান, আজিজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রাম বড়াবিলা থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ির দিকে আসছিল। পথে বাঁশ ফেলে গতিরোধ করে তাকে রড দিয়ে প্রথমে কোনাগ্রাম গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাজিদ রাফি (৩০) মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়।
এরপর কোনাগ্রামের জাকির মন্ডলের ছেলে ইরান মন্ডল, আনোয়ার মন্ডলের ছেলে নিশাত মন্ডল (২৬), মৃত মালেক মহাজনের ছেলে রেজাউল সজাজনসহ (৩০) আরও ৭-৮ জন তাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।
তিনি আরও জানান, তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার করে প্রথমে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। ফরিদপুর থেকেও তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। খুব দ্রুতই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহমান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, নারুয়ার কোনাগ্রামে গড়াই নদীতে জেগে ওঠা চর দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিহীন ও ভূমিদস্যুদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে।
সরকার ভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বন্দোবস্ত করে দিলেও স্থানীয় প্রভাবশালী শাহাদত হোসেন ও তার দলবল সেটি দখল করতে বাধা দেয়। বন্দোবস্ত নিয়েও ভূমিহীনরা দখলে যেতে না পারায় তারা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেন।
ভূমিহীনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে প্রশাসন একটি মামলা করে। তাতে শাহাদত হোসেনসহ তার দলের অনেককেই ভূমিদস্যু হিসেবে চিহ্নিত করেন। শাহাদত হোসেনের বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।