টেলিগ্রাম গ্রুপ থেকে উঠতি বয়সের তরুণীদের আপত্তিকর ভিডিও বেচা-কেনা করা চক্রের নয়জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আইডি হ্যাক করে তরুণীদের গোপন ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিত চক্রটি। পরে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা দাবি করত চক্রের সদস্যরা। টাকা দিতে না পারলে ভিডিও কলে এসে আপত্তিকর কর্মকাণ্ড করতে বাধ্য করা হতো।
সোমবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হোতা মার্ক-সাকারবার্গ ওরফে আবু সায়েম, শাহরিয়ার আফসান অভ্র, বোগদাদী শাকিল, ডিটিআর শুভ ওরফে মশিউর রহমান, মো. জসীম, ক্যাকটাস ওরফে কেতন চাকমা, এল ডোরাডো ওরফে শাহেদ, তুর্য ওরফে মারুফ ও মিঞা ভাই ওরফে নাজমুল সম্রাট।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী গ্রেফতার ৯ জনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই, গ্রুপটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের কাছ থেকে যে কেবল টাকা আয় করে, তা নয়; চক্রটি ওইসব ভিডিও দেশে-বিদেশে বিক্রি করেও কোটি টাকা আয় করেছে।
মাসে ১ থেকে দুই হাজার টাকা সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, পর্তুগাল, কানাডা, আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের মতো দেশের অসংখ্য ক্রেতা গ্রুপটির সদস্য হয়েছেন। তারা অল্পবয়সী মেয়েদের আপত্তিকর ওইসব কনটেন্ট কিনে সংরক্ষণ করেন।
‘চক্রটির নেতৃত্ব দেয় মার্ক সাকারবার্গ নামের এক ব্যক্তি। শুরুতে খুবই চতুর এই মার্ককে চিহ্নিত করা সহজ ছিল না। মার্কের আসল নাম আবু সায়েম। সায়েম থাকে চট্টগ্রামে। এনআইডি অনুযায়ী তার বয়স ২০ বছর। সে শ্যামলী পলিটেনিক ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম থেকে ইলেকট্রিক্যালে ডিপ্লোমা করেছে। তার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।’
সিআইডি জানায়, এক ভুক্তভোগী ও তার প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পমপম গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মার্ক সাকারবার্গ ও তার দলের নামে পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হয়।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মার্ক সাকারবার্গ ওরফে সায়েমকে গ্রেফতার করা হয়।
মার্কের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার ঘনিষ্ট দুই বন্ধু শাহরিয়ার আফসান অভ্রকে চট্টগ্রামের একটি হাউজিং এলাকা থেকে এবং বোগদাদী শাকিলকে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
তিনি বলেন, অ্যাডমিনদের কাজ ছিল মার্কের হয়ে নতুন নতুন কনটেন্ট জোগাড়। নতুন কনটেন্ট পেতে তারা ভুয়া এনআইডি বানিয়ে টার্গেটের ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম আইডি হ্যাক করতেন একসময়।