কখনও তিনি তরুণ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, কখনও গবেষক, আবার কখনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-এমন অ’সংখ্য ভুয়া পরিচয়ে পরিচিত ইশরাত রফিক ঈশিতা। আন্তর্জাতিক ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ে প্রতারণার অ’ভিযোগে এই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব’।
রোববার (১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি ইমরান খান।
র্যাব’ বলছে, ‘তিনি নিজেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পরিচয় দিতেন। তাছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দেশি ও বিদেশি সংস্থার ভুয়া প্রতিনিধি পরিচয়ে প্রতারণাও করেছেন। কথিত এই তরুণ চিকিৎসা বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আসছে।’
গত বছর ইসরাত বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে ‘বছর সেরা নারী বিজ্ঞানী’ পুরস্কার পান। এ পুরস্কারের নাম ইন্টারন্যাশনাল ইন্সপিরেশনাল ওমেন অ্যাওয়ার্ড (আইআইডব্লিউ ২০২০)। ভারতের উত্তর প্রদেশের হোটেল পার্ক অ্যাসেন্টে এক অনুষ্ঠানে ইশরাতের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সংবাদটি দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন ছাড়াও প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে গু’রুত্বের সঙ্গে প্রকাশ পায়।
কিন্তু ইশরাত এমনিতেই পুরস্কার পাননি; প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তিনি সবাইকে বোকা বানান। ইশরাত টেলিভিশনের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সচেতনতা অনুষ্ঠানে হাজির ‘হতেন। দিতেন টিপস। এভাবে তিনি সবার কাছে নিজেকে বিশ্বস্ত করে তোলেন। যেমনটা করতেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ করিম। ঠিক তারই মতো করে প্রতারণার কৌশল ব্যবহার করতেন ইশরাত।
এর আগে তিনি ‘রিসার্চ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ও জিতেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পার্ক রেজিস ক্রিস কিন হোটেল এক অনুষ্ঠানে তার হাতে এ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। বছরের সেরা নারী বিজ্ঞানীর অ্যাওয়ার্ড ছাড়াও আরও কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি। যেমন- ভারতের ‘স্টেট জেম অ্যাওয়ার্ড ২০২০ ’ এবং থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলনে অংশ নিয়ে ‘আউটস্ট্যান্ডিং সায়েন্টিস্ট অ্যান্ড রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। ২০১৮ সালে লিন্ডা ও নোবেল লরিয়েট মিট-মেডিসিনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বলেও দাবি করেন ইসরাত। এদিকে ইশরাতের এসব দাবির সবই ভুয়া বলে জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অ’ভিযানে অংশ নেয়া র্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা কদিন ধরে তার গতিবিধি নজরদারিতে রেখেছিলাম। তখন দেখতে পাই তার বাড়ির সাইনবোর্ডে চিকিৎসকের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পদ কর্নেল লেখা। কিন্তু নিজেকে ব্রিগেডিয়ার পরিচয় দিতেন। তখন ইশরাতকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার সাইনবোর্ডে কর্নেল লেখা; কিন্তু পরিচয় দিচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার? উত্তরে ইশরাত বলেন, প্রজ্ঞাপন হবে, কাগজপত্র রে’ডি হচ্ছে। তাই সাইনবোর্ড ঠিক করিনি। করে ফেলবো।