ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে মাদারীপুরে এক গৃহবধূকে গণধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে দন্ত্যচিকিৎসক ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে। ঘুমের ঔষধ খাইয়ে গৃহবধূর গোপন ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে ৬ মাস ধরে গণধর্ষণ করে আসছে অভিযুক্তরা। শুধু ধর্ষণই নয়, এক দফায় ধর্ষিতার কাছ থেকে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে ২০ হাজার টাকাও।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকিতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না ভুক্তভোগীর পরিবার। থানায় অভিযোগ দিলেও তিনদিনেও মামলা রেকর্ড হয়নি। গ্রেফতার হয়নি আসামি। এতে ক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ। যদিও পুলিশ বলছে, তদন্ত করে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সেবা ওরাল এ্যান্ড ডেন্টাল কেয়ারে চিকিৎসার জন্য যান ওই গৃহবধূ। এসময় প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ছায়েদুল হক কিরণ ওই গৃহবধূকে ঘুমের ওধুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে বলে অভিযোগ নির্যাতিতার।
পরে সেই ভিডিও কিরনের বন্ধু মেহেদী হাসান শিকদার ও সোহাগ মিয়াকে দিলে তারা ফেসবুকে আপলোড করার ভয় দেখিয়ে পর্যায়েক্রমে গত ৬ মাস ধরে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে আসছে। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক সমলোচনা শুরু হয়। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না ভুক্তভোগীর পরিবার। দফায় দফায় দেয়া হচ্ছে হুমকি।
নির্যাতিতা গৃহবধূ বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য ডাক্তার কিরণের কাছে যাই। এসময় কিরন আমাকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে। তা আবার ভিডিও করে রাখে। পরে সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে একাধিক বার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারিরীক সম্পর্ক করে। কিরন কিছুদিন করার পর তার বন্ধু হাসান ও সোহাগকেও সেই ভিডিও দেয়। এরপর হাসান এবং সোহাগ সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আামার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে। এছাড়াও সোহাগ একবার ভিডিও ডিলেট করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকাও নেয়। কিন্তু ভিডিও ডিলেট করেনি। উল্টো আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বার বার ধর্ষণ করে।
মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, একজন নারীকে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে একাধিক বার ধর্ষণ করে। রাষ্ট্রের উচিত এই অসহয় নারীর পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য গণধর্ষনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আরও নিরাপত্তহীনতায় রয়েছে ওই নারী। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তায় পুলিশের রহস্যময় ভুমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ তিনি।
কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ৬ মাস আগের ঘটনা। জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্তরা পালিয়েছে। তবে তদন্ত করে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।