বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় প্রাইভেটকার চালক সবুজ খন্দকারকে (৬০) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় গ্রেফতার মাস্টার মাইন্ডসহ দুজন বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এরমধ্যে একজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের হেফাজত থেকে নিহতের প্রাইভেটকার, স্যান্ডেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার দুজন হলেন- বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার মাগুড়া গ্রামের মৃত তছির উদ্দিনের ছেলে জহুরুল ইসলাম (৪২) ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার হাজিপুরের মৃত সওদাগরের ছেলে ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার বেলোহালী খামারগাড়ি গ্রামের আজাহার আলীর জামাতা আবুল কালাম আজাদ বাবুল (৫২)।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে দুপচাঁচিয়ার বেলোহালী গ্রামের একটি পুকুর থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার দেওয়ানবাগ মদনপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন খন্দকারের ছেলে সবুজ খন্দকারের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতের ভাই মালু খন্দকার দুপচাঁচিয়া থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশের একাধিক দল মাঠে নামে। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকারীদের শনাক্ত করেন।
বুধবার বিকালে দুপচাঁচিয়া থেকে জহুরুল ইসলাম ও বগুড়া শহরের তিনমাথা এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে আবুল কালাম আজাদ বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কার চালক সবুজ খন্দকারকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তাদের দেখানো স্থান বাবুলের চৌমুহনীর ভাড়া বাসার রুম থেকে মৃতের স্যান্ডেল, মোবাইল ফোন ও বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় তাওসিফ ফিলিং স্টেশন থেকে প্রাইভেট কারটি উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, বাবুল গত ৩ নভেম্বর ঢাকা থেকে ৯ হাজার টাকায় প্রাইভেটকারটি ভাড়া নিয়ে দুপচাঁচিয়ার চৌমুহনীর ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি (বাবুল) গত ৫ অক্টোবর বিকালে স্ত্রী ও সন্তানদের শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেন। রাত ১২টার দিকে জহুরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন সেখানে আসেন। গল্পের একপর্যায়ে তারা কার চালক সবুজ খন্দকারের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এরপর গলা টিপে, লাথি মেরে, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাতে হত্যা করেন। পরে লাশ বস্তায় তুলে রিকশা ভ্যানে করে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বেলোহালী এলাকায় একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে নিহতের প্রাইভেটকারটি বিক্রির জন্য বাবুল ও জহুরুল বগুড়া শহরে নিয়ে আসেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে আসামি আবুল কালাম আজাদ বাবুল বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জহুরুল ইসলামকে সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিনের মঞ্জুর করেছেন। পরে বাবুলকে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে।