নোয়াখালীতে দিনদুপুরে বাসার তালা কেটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় লুণ্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার ও টাকাসহ দুই চোরকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুরির টাকার একাংশ তারা মসজিদ-মাদরাসায় দান করেন বলে জানান নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার আশুলিরচর পূর্বকান্দি গ্রামের মৃত আসলাম মোল্লার ছেলে আশিকুল ইসলাম (৩০) ও খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার নিরালা বাজার এলাকার মৃত আরমান মোল্লার ছেলে মো. মামুন মোল্লা (২৮)।
এরআগে চুরি মামলার সূত্র ধরে শনিবার (৬ আগস্ট) দিনভর ঢাকার উত্তরা, মহাখালী, সদরঘাট, গুলশান, বাড্ডা, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে নোয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও সুধারাম থানার পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি করা নগদ পাঁচ হাজার ৯০০ টাকা, চারটি স্বর্ণের আংটি, এক জোড়া কানের দুল, লকেটসহ স্বর্ণের চেইন, এক জোড়া রূপার চুড়ি, দুই জোড়া নুপুর, একটি ব্রেসলেট, একটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি রেঞ্জ, তালা ভাঙার টালী, ঘটনার সময় আসামি আশিকের পরনের শার্ট, জুতা, প্যান্ট ও মাস্ক জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ এপ্রিল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের সময় নোয়াখালীর পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়া এলাকার গোল্ডেন প্যালেসের দ্বিতীয় তলায় জনৈক ফাতেমা বেগমের বাসায় দরজার তালা ভেঙে ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ এক লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরদল। পরে ৭ এপ্রিল এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা (নম্বর ১২) করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ।
পরে সিসিটিভির ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাঈদ মিয়া ও সুধারাম থানার এসআই স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ গোপন সূত্রে ঢাকায় অভিযান চালান। এ সময় বাড্ডার সেকান্দরবাগ এলাকার ইউসুফ স্কুলের পাশে মমিনুলের বাসা থেকে চুরির মালামালসহ দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে আশিকের বিরুদ্ধে কুমিল্লার দেবিদ্বার, ঢাকার সবুজবাগ থানাসহ একাধিক চুরির মামলা ও মামুন মোল্লার বিরুদ্ধে ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, কুমিল্লার কোতোয়ালি থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরির মামলা রয়েছে। তাদের দলনেতাসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
আসামি আশিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি যে কোনো তালা অনায়াসে ভাঙতে পারি। আমরা ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সুযোগ বুঝে চুরির ঘটনা ঘটাই। এরপর চুরি করা মালামাল দলনেতার কাছে জমা দিলে তিনি বিক্রি করে টাকা ভাগ করে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বালা-মছিবত থেকে বাঁচতে’ চোরাইপণ্য বিক্রির একটি অংশ মসজিদ-মাদরাসায় দান করার জন্য এবং আরেকটি অংশ মামলা খরচের জন্য রাখা হয়।