English

26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

বান্দরবানের রুমায় গুলি বিনিময়, সেনা সদস্য ও জেএসএসের ৩ সন্ত্রাসী নিহত

- Advertisements -

বান্দরবানের রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী সেপ্রু এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয়পক্ষের গুলি বিনিময়ে সেনাবাহিনীর টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ও জেএসএসের তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আজ বৃহস্পতিবার আইএসপিআরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘বান্দরবান জেলাস্থ রুমা জোনের একটি টহল দলের সাথে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের ঘটনায় সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার নিহত এবং একজন সৈনিক আহত হন।’

‘এর আগে, জেএসএস পন্থী সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে আগমন করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প হতে সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি নিরাপত্তা টহল দল উক্ত এলাকায় গমন করে। বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে দশটায় টহল দলটি বথিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত টহল দলের উপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। সদা প্রস্তুত সেনা টহল দলটির দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং সাহসী পাল্টা হামলায় সন্তু লারমার মদদপুষ্ট জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বন্দুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হবার আলামত পাওয়া যায়। এ সময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পরেন এবং সৈনিক ফিরোজ নামে একজন সেনাসদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। নিহত এবং আহত সেনা সদস্যদেরকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রুমা হতে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে হেলিকপ্টার যোগে স্থানান্তর করা হয়।’

আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, ‘উক্ত অভিযানে সেনা টহল দল কর্তৃক সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি এসএমজি, ২৪৯ রাউন্ড তাজা গুলি, তিনটি এম্যোনিশন ম্যাগাজিন, তিনটি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের পাঁচ রাউন্ড গুলি, চার জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজির নগদ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা জব্দ করা হয়। বর্তমানে সেনা টহল দল উক্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি জারি রেখেছে এবং স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সেনা সদস্যবৃন্দ নিরীহ পার্বত্য জনগোষ্ঠির নিরাপত্তা রক্ষায় বদ্ধ পরিকর।’

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ‘অনুচ্ছেদ ঘ’ এর ধারা অনুযায়ী সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেয়ার মাধ্যমে তৎকালীন শান্তিবাহিনীর সকল সদস্যদের আত্মসমর্পণের শর্ত থাকলেও জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা তা ভঙ্গ করে চুক্তি সম্পাদনের পরবর্তী সময় হতেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী লালন করে আসছেন। সম্প্রতি তার দলটি রাঙামাটি জেলার সীমানা ছাড়িয়ে বান্দরবান জেলার গহীন পার্বত্য অরণ্যে আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে পার্বত্যবাসী দাবি করছে। প্রায়শই সন্তু লারমা ও তার দল সরকারের বিরুদ্ধে শান্তি চুক্তি ভঙ্গ ও বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ করে আসছে। অথচ এ বছর জানুয়ারি মাসেই পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে প্রধানমন্ত্রী নানিয়ারচর সেতু এবং বালুখালি-ঘুনধুম সীমান্ত সংযোগ সড়ক উদ্বোধন করেন।  পক্ষান্তরে উক্ত এলাকায় তৎপর চারটি আঞ্চলিক দল হত্যা, গুম, চাঁদাবাজি ইত্যাদি দুষ্কৃতিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ে নিরীহ সাধারণ মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডদা রক্ষা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য বদ্ধপরিকর।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন