ফেসবুকে পরিচয়। এরপর চ্যাটিং। এমনিভাবে মোবাইলে প্রেমের নানা প্রলোভন দিয়ে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাজারগাও গ্রামের ইবরাহিম হোসেনের কিশোর ছেলে জয়নাল (১৭) কে বগুড়ার শাজাহানপুরে ডেকে এনে স্বামী পরিত্যাক্তা ও তিন সন্তানের জননী সখিনা বেগম (৪০) এর সাথে বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছে এলাকার বখাটেরা। তবে কাবিননামায় উল্লেখিত কাজী এ বিয়ে রেজিষ্ট্রির কথা অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে ৯৯৯ ফোন করেও কোন সমাধান হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর গ্রামে।
শনিবার ১৮ জুন এসব তথ্য জানান এলাকাবাসী। তারা জানান, সখিনার ১২ বছর, ৯ বছর ও ৬ বছর বয়সী ছেলেমেয়ে রয়েছে। এবয়সে ছেলে সমতুল্য একটি ছেলের সাথে তার বিয়ে একটি ঘৃন্যতম কাজ। তাও আবার ছেলের অভিভবাবকহীন ও অপ্রাপ্ত বয়সী ছেলের সাথে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা আরও বলেন, সখিনার চাল-চলনে অসন্তুষ্ট হয়ে স্বামী তাকে ফেলে বেশ কিছুদিন আগে চলে গেছে। এরপর থেকে মোবাইলে ফেসবুকে ভিডিও কলে বিভিন্ন ছেলেদের সাথে প্রেম করে বলেও তারা জানেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১০/১৫ দিন আগে ওই কিশোর ছেলেকে প্রেমের প্রলোভনে ডেকে এনে লোকজন হাত করে প্রভাব খাটিয়ে দুই লক্ষ টাকা কাবিন ধরে বিয়ে পড়িয়ে দেয়।
কাবিননামায় দেখা যায়, নিজ এলাকা আশেকপুরের কাজী ব্যতিরেকে অন্য এলাকা শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়নের বীরগ্রামের কাজী দিয়ে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে সেই কাজী মুজাহিদকে অভিভাবকহীন অপ্রাপ্ত একটি ছেলের সাথে বিয়ের কাবিন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে জানান।
সখিনা জানান, মোবাইলে ফেসবুকে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে আসতে বললে সে উপজেলার মাঝিড়া বন্দরে আসে এবং তারা সেখান থেকে নিয়ে আসে এবং কিছুলোক বিয়ে পড়িয়ে দেয়।
কিশোর জয়নাল জানায়, সখিনার সাথে তার মোবাইলে পরিচয়। আমি জানিনা সে ৩ সন্তানের মা। মোবাইলে সে তার সাথে প্রেম করে। এমনিভাবে আমাকে সরল মনে বগুড়ায় বেড়াতে আসতে বললে, সে আসে। এরপর তাকে কিছুলোক বাড়িতে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ে দেয়। কিন্তু এখন সে বাড়িতে যেতে চায় কিন্তু যেতে দিচ্ছেনা।
এদিকে বিষয়টি জটিল হওয়ায়, ৯৯৯ ফোন দিলে শাজাহানপুর থানার এসআই সাদ্দাম হোসেন ও এসআই শামীম আহমেদ ও এসআই আবদুর রহমান ঘটনাস্থলে যায়। তবে ুছেলেটিকে উদ্ধার না করে তারা ফেরত আসে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, যেহেতু বিয়ে হয়েছে সে ক্ষেত্রে করার কিছুই নাই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া আদালতের আইনজীবি রহিমা খাতুন মেরী বলেন, দেশের আইন অণুযায়ী বিয়ের বয়স ছেলেদের ক্ষেত্রে ২২ বছর এবং মেয়েদের ১৮ বছর। এ ক্ষেত্রে ছেলেটির বয়স কম এবং নাবালক। সেক্ষেত্রে সে অবশ্যই প্রলোভনের শিকার হয়েছে। তাই আইনের দৃষ্টিতে এ বিয়ে অবৈধ ও অগ্রাহ্য। তাছাড়া অভিভাবকহীন নাবালক ছেলেটিকে যারা বিয়ে পড়িয়েছে এবং এর সাথে যারা জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন,তিন সন্তানের মা অবশ্যই সাবালক। সে অবশ্যই নাবালক একটি ছেলেকে প্রলোভন না দিলে এতোদুর আসেনি। তাই ছেলেটিকে উদ্ধার করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করে বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন।