টাঙ্গাইলে পরকীয়া প্রেমিকাকে সন্তুষ্ট করতে না পেরে ওড়না দিয়ে মুখ চেপে ধরে খুন করা হয় প্রেমিক শফিকুল ইসলামকে। পরে তার মরদেহ বস্তায় ভরে পাশের ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
পরকীয়া প্রেমিকা মোরশেদা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানান।
মোরশেদা আক্তার (৩৩) নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়নের মানড়া নয়াপাড়া গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাবুল হোসেনের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোরশেদার দেবর বারেক ও ভাসুর ফুলচানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
স্বীকারোক্তিতে মোরশেদা জানান, প্রতিবেশী মৃত সমেশ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নানা রোগে জর্জরিত। তার স্বামী বাবুল হোসেন এক বছর ধরে সিঙ্গাপুরে থাকেন। সম্প্রতি শফিকুল সুসম্পর্কের (পরকীয়ার) জের ধরে তার সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরকীয়ার সম্পর্ক থাকাকালে অসুস্থতার কারণে শফিকুল কখনওই মোরশেদাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। গত সোমবার বিকালে শফিকুল আবারও মোরশেদা আক্তারের বাড়িতে যান। ওই সময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শফিকুল ইসলাম তার পরকীয়া প্রেমিকা মোরশেদা আক্তারের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। বাড়ির টিউবওয়েলের কাছে ধস্তাধস্তির সময় মোরশেদা তার পড়নের ওড়না দিয়ে শফিকুলের মুখ চেপে ধরেন। এ সময় শফিকুল টিউবওয়েলের মেঝেতে পড়ে গুরুতর আহত হন। ওড়না দিয়ে মুখ চেপে ধরে রাখায় শফিকুলের মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহ পাশের টয়লেটে লুকিয়ে রাখে।
মোরশেদা বিষয়টি তার দেবর বারেক ও ভাসুর ফুলচানকে জানান। তারা মরদেহ লুকানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওইদিনই রাত প্রায় ১২টার দিকে মরদেহ চটের বস্তায় ভরে বারেকের অটোরিকশায় উঠিয়ে গ্রামের ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার সকালে নাগরপুর উপজেলার মানড়া নয়াপাড়া গ্রামের ব্রিজের নিচ থেকে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহটি শফিকুল ইসলামের বলে তার স্ত্রী রাহেলা বেগম শনাক্ত করেন এবং নিজে বাদি হয়ে নাগরপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নির্দেশনায় এস আই মনোয়ার হোসেন ওই ঘটনার তদন্ত করেন। উন্নত তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও সনাতন পদ্ধতির পুলিশি কৌশল ব্যবহার করে এস আই মনোয়ার হোসেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেন। একই সাথে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেন।