টাকা হাতিয়ে নিতে কিশোরগঞ্জের রমিজ উদ্দিনকে হত্যা করে মুয়জ্জিন জাকির হোসেন। হত্যার পর মসজিদে আজান দিয়ে নামাজে অংশ নেন জাকির। পরে লাশ উদ্ধারের পর আত্মগোপনের জন্য ৪০ দিনের চিল্লায় যান তিনি। এর আগে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ফাঁদ পাতেন জাকির। অল্প দামে গরু কেনার কথা বলে ডেকে নেন রমিজ উদ্দিনকে।
গত ৩ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ থানার কাটবাড়িয়া ডাউকিয়া এলাকায় খুন হন গরু ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দীন। নিহত রমিজ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী। হত্যার দুই মাস ২০ দিন পর খুনি জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৪। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে জাকিত হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনার বর্ণনা দেন।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
র্যাব জানায়, ২০০৬ সালে রমিজ উদ্দিন প্রবাস জীবন শেষ করে এসে গরুর খামার দেন। একই এলাকার মসজিদের মুয়াজ্জিন জাকির হোসেন জানতেন জাকির হোসেন। তাই তিনি রমিজের টাকা হাতিয়ে নিতে কম টাকায় গরু ক্রয়ের লোভ দেখান। গরু কিনতে ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংক থেকে ৬ লাখ টাকা তুলে ২ অক্টোবর রাতে রমিজকে নিয়ে প্রথমে মনোহরদী থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী এবং পরে বড়পুল এলাকায় যান জাকির। সেখানে একটি কলা বাগানে নিয়ে রমিজের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। এরপর রমিজ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার কপাল, মুখ, বাম চোখের ওপর-নিচে ও মাথার বিভিন্ন স্থানে আরো আঘাত করে মুয়াজ্জিন জাকির। পরে তিনি রমিজকে মৃত ভেবে সেখানে ফেলে রেখে ছয় লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
খন্দকার আল মঈন জানান, হত্যাকাণ্ডের পর মুয়াজ্জিন প্রথমে কিশোরগঞ্জ থেকে মনোহরদী চলে যায় এবং নিজ বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে উঠে তিনি ফজরের আজান দিয়ে নামাজে অংশ নেন। নামাজ শেষে মক্তবে ২০ জন ছাত্রকে আরবি পড়ান।
পরদিন (৩ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে রমিজ উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পারলে জাকির হোসেন ভয় পেয়ে মসজিদ থেকে ছুটি নিয়ে আত্মগোপনে নরসিংদীর মাধবদী যায়। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়, ময়মনসিংহ সদর, সিলেট জেলার ফেঞ্জুগঞ্জ এবং সিলেট থেকে পুনরায় ময়মনসিংহ এসে আত্মগোপনে থাকে। পরে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার একটি মসজিদে আসে এবং সেখান থেকে চিল্লায় লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতী উপজেলায় আত্মগোপনে থাকে। সেখান থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।