দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শিশু ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শরীফ উদ্দিন আহমেদ সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় অপর আসামি আফজাল হোসেন কবিরাজের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
আসামি সাইফুল জেলার পার্বতীপুর উপজেলার শিংগীমারী তকেয়াপাড়া (জমিরহাট) গ্রামের মৃত জহির উদ্দীনের ছেলে। অপরদিকে আফজাল হোসেন একই এলাকার বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর দুপুরে বাইরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় পার্বতীপুর উপজেলার পাঁচ বছর বয়সী ওই শিশু। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে রাতে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ওই শিশুর বাবা। পরের দিন সকালে শিশুটিকে বাড়ির পাশে হলদি ক্ষেত থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় ২০ অক্টোবর রাতে নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে পার্বতীপুর থানায় সাইফুল ইসলাম ও আফজাল হোসেনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সোমবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট তৈয়বা বেগম বলেন, মামলার প্রধান আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শিশুর বাবা বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেটা যেন কারও সন্তানের সঙ্গে না ঘটে। রায়ে খুশি, তবে তার ফাঁসির আদেশ হলে আমি বেশি খুশি হতাম। ওই ঘটনার পর আমার মেয়ে এখনো অসুস্থ, নিয়মিত তাকে চিকিৎসা দিতে হয়।