দেখতে অবিকল চকলেট কেক, ফয়েল পেপারে মোড়ানো। কোনো কোনোটা আবার যেন চকলেট। সুদৃশ্য গ্লাসে ‘সবজি দিয়ে তৈরি’ মুখরোচক মিল্কশেক। কিন্তু এসবের ভেতর আসলে মাদক। উচ্চ বিত্তের উঠতি তরুণ-তরুণীরা এখন মজেছে এই ভয়ঙ্কর মাদকে। এসব কেক, চকলেট ও মিল্কশেক তৈরি হচ্ছে গাঁজা দিয়ে।
ইনস্টগ্রামে নেটওয়ার্ক তৈরি করে উৎপাদনকারীরা এই ভয়ঙ্কর খাবার হোম ডেলিভারিও দিচ্ছে অভিজাত এলাকার বাসাবাড়িতে। গুলশান থানা পুলিশ গাঁজা দিয়ে কেক তৈরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করলে গাঁজার নতুন ব্যবহারের এই ভয়ঙ্কর চিত্র বেরিয়ে আসে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- জুবায়ের হোসেন (২৪), অনুভব খান রিবু (২৩) ও নাফিসা নাজা (২২)। তাদের কাছ থেকে গাঁজার নির্যাস দিয়ে তৈরি প্রতিটি এক কেজি ওজনের পাঁচটি চকলেটের বার, গাঁজায় তৈরি বোতলে ভরা এক কেজি মিল্কশেক, ফুয়েলে মোড়ানো গাঁজার ৫০টি চকলেট, দুইটি চ্যাপ্টা চকলেটের বার, দুইটি কেক, চকলেট তৈরির ডায়েস চারটি, চারটি স্টিকার রোল, চারটি অ্যাঙ্কর জেলটিন, ফ্লেবার জুস, সাতটি খালি প্লাস্টিকের জুস পট, ১০৭টি প্লাস্টিকের গ্লাস ও এক কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, চক্রটি ইউটিউবে কানাডিয়ান ও আফ্রিকান মাদক ব্যবসায়ীদের তৈরি বিভিন্ন ভিডিও দেখে দেশীয় পদ্ধতিতে গাঁজা দিয়ে কেক, চকলেট, মিল্কশেক তৈরি করা শেখে বলে জানিয়েছে। এরা রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ১৪ নম্বর রোডে জুবায়েরের বাসায় বসে গাঁজা দিয়ে এসব পণ্য তৈরি করতো। এরপর তা হোম ডেলিভারির মাধ্যমে পৌঁছে দিতো।
ডিসি আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিনজন বলেছে, গত ছয় মাস ধরে তারা গাঁজার কেক, চকলেট ও মিল্কশেক তৈরি করে তা বিক্রি করছিল। এজন্য তাদের একটি ক্রেতা গ্রুপও গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে ইনস্টগ্রামের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ চলে। এই ক্রেতাদের বিষয়ে কিছু তথ্য তারা পেয়েছেন।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুবায়ের জানিয়েছে, পাঁচ কেজি গাঁজার নির্যাস দিয়ে এক কেজি ওজনের গাঁজার চকলেট তৈরি হতো। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা তাদের ক্রেতা।