কুমিল্লায় স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় পরিবহন নেতা রেজাউল করিম ওরফে রাজা মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। তাকে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাড. মোঃ নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামের শান্তিরঞ্জন শীলের ছেলে তাপস চন্দ্র শীল (২৫), একই গ্রামের মৃত রেজাউল করিম রাজা মিয়ার স্ত্রী মোসা. আলো আক্তার (৩০) এবং একই জেলার চান্দিনা উপজেলার বশিকপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার আবদুস সামাদ ওরফে সামাদ সরকারের ছেলে মো. রাশেদ (২৮)।
জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার পুরাতন চরচাষি ছায়েদ আলী মুন্সী বাড়ির মৃত ছোয়াব আলী বেপারীর ছেলে মৃত মোঃ রেজাউল করিম ওরফে রাজা মিয়া। তিনি দাউদকান্দি বাসস্ট্যান্ডে গজারিয়া পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৩ জুন আবদুল আউয়াল কমিশনারের বসত ঘরের পাশ থেকে তার ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তার ভাই মো. খাজা মিয়া (৪৮) বাদী হয়ে রাজা মিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সন্দেহভাজন মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী আলো আক্তারকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। তার সাথে তাপস চন্দ্র শীলের পরকীয় ছিলো। স্বামী এতে বাধা দেয়ায় ভাড়াটে খুনি রাশেদকে নিয়ে তাকে হত্যা করেন। সবাই আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালত ২০১৫ সালের ২৭ মে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। পরে ২১জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি রাশেদ উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি মোসাঃ আলো আক্তার ও তাপস চন্দ্র শীল পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাড. মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, এই রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মামলার এজাহারকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ শীঘ্রই রায় কার্যকর করার জন্য জোর দাবি জানান।
অপরদিকে আসামি পক্ষের অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, আমরা রায়ের কপি হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।