মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার শিবচরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক কলেজছাত্রকে মারধরের পরে সেই দৃশ্যের ভিডিও টিকটকে প্রচার করেছে একদল কিশোর। নিজেদের ক্ষমতাবান প্রমান করতেই তারা এটি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনায় করা মামলাটি গ্রহণ করেছে শিবচর থানা পুলিশ। তবে মামলা নেওয়ার ৭ দিন আগে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত রাহুল নামের এক কিশোর ৮-১০ জন কিশোর নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করেছে। তারা রাহুল গ্যাং নামে পরিচিত।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর রাহুলসহ কয়েকজন তরুণ বিকট শব্দে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। এ সময় শিবচরের সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিব মাহমুদের গায়ে কাদা-পানি ছিটকে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা ওই কলেজছাত্রকে উল্টো গালিগালাজ করে চলে যায়।
এরপর গত ২৬ অক্টোবর কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে শিবচরের উপশহর এলাকায় কলেজছাত্র দিপুর পথরোধ করে ওই কিশোর দল। সেখান থেকে জোর করে তাকে পাশের নির্জন জায়গায় নিয়ে লোহার রড দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করা হয়। সেই দৃশ্য তারা ভিডিও করে রাখে। এ ঘটনার আহত দিপুকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মারধরের সেই ভিডিও টিকটক বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। পরে নিজের নিরাপত্তা এবং দোষীদের শাস্তির জন্য শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আহত দিপু বলেন, কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ না থাকা স্বত্ত্বেও আমাকে মারধর করা হয়েছে। এমনকি যারা আমাকে মারধর করেছে তাদের নামও তখন পর্যন্ত আমি জানতাম না। পরে রাহুল, ফাহাদ, আব্দুল্লাহ, হামজা এই চারজনের নাম জানতে পারি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা চারজন ছাড়াও আরও ৮ থেকে ১০ জন রাহুল গ্যাং নামে গ্রুপে চলে। এছাড়া নিজেদের ক্ষমতার প্রকাশের জন্য টিকটকে-ফেসবুকে মারধরের ভিডিও দিয়ে থাকে। ওই দিন শরীরে মারধরের পাশাপাশি আমার মাথাতেও আঘাত করা হয়েছিল।
দিপুর বাবা আবুল হোসেন মৃধা বলেন, আমার ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছি। তাছাড়া থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর আমাদের পরিবারকে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আমাদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার দাবী করছি।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর একজন এসআইকে প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার তিনজনের নামে ও অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।