English

23 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

‘হাই প্রোফাইল নয়, আমাদের প্রয়োজন আমাদের কোচ, বাংলাদেশের কোচ’

- Advertisements -

একটা কোচ যখন নিয়োগ দেওয়া হয় তার প্রক্রিয়া আসলে কি থাকে- সেটা জানার খুব ইচ্ছা আমার।

এ যাবত কালে প্রায় ৯-১০ জন কোচের সাথে কাজ করেছি। আমি যতটুকু দেখেছি প্রত্যেকটা কোচ তার নিজের মতো করে কাজ শুরু করে, যেটা করাটাও স্বাভাবিক। কারণ এক এক জনের কাজের ধরন এক এক রকম। কিন্তু সব সময় দেখেছি প্রত্যেকটি কোচ তার নিজস্ব একজন বা দুইজন প্রিয় খেলোয়াড় বানিয়ে নেয়, যা পরে সিলেক্টর, ক্যাপ্টেন বা অন্য কেউ তাকে আর কিছুই বুঝাতে পারে না বরং সম্পর্কগুলো জটিল হতে থাকে। আর ঐ পছন্দের জন্য সে আবার দুইজনকে এমন অপছন্দ করা শুরু করে যে তাদের আর দেখতেই পারে না। এক পর্যায়ে এমন জিদ শুরু করে যে প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দিব, এমন কথা প্রকাশ্যেও শুনেছি কয়েকবার কোচের মুখে। আমার পয়েন্টটা হলো যে কোচের পছন্দ নির্দিষ্ট কিছু খেলোয়াড় হতেই পারে সেটা সব কোচেরই হয়, অন্যান্য দেশেও হয়, এটাই স্বাভাবিক। তবে কখনও সেটা প্রকাশ্যে বুঝতে দেয় না, অনুমান করতে হয়। কারণ দলের সেরা ৩ ও ৪ জন খেলোয়াড়ই শুধু ম্যাচ জেতায় না। আর জেতালেও আপনি একজনের জন্য আরেকজনকে ছোট করতে পারেন না। দর্শক বা সাংবাদিক অনেক কিছু লিখতেও পারে বলতেও পারে, যেটা একদম স্বাভাবিক ব্যাপার।

কোচকে বলা হয় (ফাদার অফ দ্য সাইড), সে সবাইকে দেখে রাখবে, প্রয়োজনে কঠোর হবে আবার দলের স্বার্থে যাকে প্রয়োজন তাকে ব্যবহার করবে। তার সব কিছুই হতে হবে পজিটিভ, কারও প্রতি কঠোর কারও প্রতি নমনীয় এটা এক রকমের বৈষম্যতে রূপ নেয় আমাদের দেশে। যা গোছানো দলকে অগোছালো করে ফেলে। এক পর্যায়ে তারা আবার নিজেদের দেশে, না হলে আইপিএল বা আরও ভালো কোন অফার পেয়ে চলে যাবে, কারণ এতো দিনে সে আমাদের দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে নিজের প্রোফাইল ও ভারি করেছে। আর বেতন তো নিয়েছে মাসে ১২-১৫ লাখ টাকা আর আমাদের কোচগুলো না খেয়ে মরে।

গালিও দেখি আমাদের কোচরাই হজম করে। আর পরে ওনারা চলে গেলে আমরা পড়ি বিপদে। আবার নতুন কোচ, নতুন পরীক্ষা, নতুন দাবি মেটানো। এভাবেই চলছে বাংলাদেশে কোচদের যাওয়া-আসা।

এবার আবার আসি আমার প্রথম লাইনটায়, কোচ নিয়োগের সময় যে নতুন কোচের ইন্টারভিউ নেওয়া হয় সেখানে আসলে তাকে কি প্রশ্ন করা হয়? বা আদৌ কি করা হয় কোনও প্রশ্ন? নাকি শুধু জানতে চাওয়া হয় তোমার কি করার ইচ্ছা – হয়তো তখন সে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরে। ওখান থেকে নতুনত্ব কিছু পেলে চিন্তা করে দারুণ কোচ, কি সুন্দর প্লান, এর মতো কোচই হয় না।

আমার তো মনে হয়, ভুল ওখানেই হয়ে যায়। কারণ আমরা মানুষকে বোঝাতে সব সময় হাইপ্রোফাইল কোচ খুঁজি, যা পরে আর কোনও কাজে আসে না। আমাদের প্রয়োজন আমাদের ক্রিকেট যে ফলো করে বা আমাদের সর্বাধিক খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে বিশ্লেষণ করে এসে ইন্টারভিউ দিচ্ছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নিয়ে আসা। তা না হলেও তো বুঝবেই না একজন সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ তৈরি করতে কতোদিন লেগেছে। বা অতীতে তাদের অবদান কি। একজন মুস্তাফিজ কীভাবে উঠে এসেছে। বার বার বলেছি আবারও বলছি দলের আগে কখনওই কোনো খেলোয়াড় হতে পারে না; ভালো না করলে বাদ পড়তেই হবে।

অফ ফর্ম সব খেলোয়াড়ের জীবনেই যায়, বাদও পড়ে। কিন্তু ম্যানেজমেন্ট থেকে অপমানিত শুধু আমাদের দেশেই বেশি হয়। পারফর্ম না করলে বাদ দিবেন স্বাভাবিক। আবার তাকে তো সহযোগিতা করতে হবে কীভাবে তাকে ফর্মে আনা যায় বা তাকে মানসিকভাবে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়।
কিন্তু কোনওভাবেই আপনি বুঝতে দিতে পারেন না যে আপনি তাকে আর আপনার সময়কালে দেখতে চান না।

এটার কারণ একটাই কোনও কোচই আমাদের দেশে কাজ করার আগে আমাদের দেশের ক্রিকেটের অনুসারী না। চাকরির জন্য আসে, শেষ হলে চলে যায়। তাই আমার মনে হয়, হাই প্রোফাইল নয়, আমাদের প্রয়োজন আমাদের কোচ, বাংলাদেশের কোচ। একদম নিজস্ব মতামত, আপনাকে মানতে হবে তা বলিনি।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন