রোহান ছিলেন পুনের ক্রিকেটার। অনূর্ধ্ব-১৯ দল পর্যন্ত খেলেছেন। ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ার বেশি দূর নিতে না পারার আক্ষেপ পোড়াচ্ছিল তাঁকে। তাই ক্রিকেট নিয়ে কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখেছেন সেই ১৯৯৯ সাল থেকে। একটু একটু করে ক্রিকেট স্যুভেনির যোগ করতে শুরু করেন। ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান থেকে শুরু করে সাকিব আল হাসানের স্মারক সংগ্রহ করেছেন তিনি। বিশ্বকাপ কাভার করতে আসা ঢাকার চার সাংবাদিক মিলে গতকাল দুপুরে ব্লেডস অব গ্লোরি ক্রিকেট জাদুঘর দেখতে গিয়েছিলাম। অভিজাত এলাকার এক ফ্ল্যাটের একটি জাদুঘর স্বাভাবিকভাবে আকর্ষণ করার কথা নয়। ভাবছিলাম, টিকিটের ২০০ টাকা জলে না যায়। কিন্তু জাদুঘরে ঢোকার পর সব ধারণা পাল্টে যায়। মনে পড়ে আগের রাতে জাতীয় দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমামের বলা কথা। তিনি বলেছিলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট মিউজিয়াম পুনেতে। সেটি আবার একজন ব্যক্তির উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত।
ক্রিকেট জাদুঘরের সব কিছু কেমন রোমাঞ্চকর মনে হতে থাকে। প্রাচীনকালের ক্রিকেট থেকে হালের আধুনিক ক্রিকেটের সব স্মারক দিয়ে সাজানো-গোছানো পরিপাটি জাদুঘর। শচীন টেন্ডুলকারের জন্য রয়েছে আলাদা একটি গ্যালারি। শতকের শতকের সব রেকর্ড। ১১টি বিশ্বকাপজয়ী দলের খেলোয়াড়দের স্বাক্ষর করা ব্যাট। প্রয়াত কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্নের ক্রিকেট বুট। ৫০০ উইকেট পাওয়া বোলারদের স্মারক বল। জাদুঘর দেখার পর বের হতে যাওয়ার মুহূর্তে জানতে পারি রোহান পাতে কথা বলতে চান বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে। দেখাতে চান আরও কিছু।
ক্রিকেটপাগল রোহান জাদুঘরে এলে গল্প জুড়ে দেন। কিছুক্ষণ পরে নিয়ে যান পাশের একটি বিল্ডিংয়ে। ছোট্ট লিফট ধরে তিন তলায় উঠতেই চোখ ছানাবড়া। হাজার হাজার জার্সি, ব্লেজার, টেস্ট ক্যাপ, আরও কত কী-ই না সাজিয়ে রাখা থরে থরে। রোহানের ভাষায় স্টোররুম। যেখান থেকে স্যুভেনিরগুলো বিলি করা হবে ভারতের আরও ১০টি জাদুঘরে। যেগুলো তৈরিও করবেন তিনি। বাংলাদেশেও একটি ক্রিকেট জাদুঘর করার পরিকল্পনা তাঁর। তবে ভালো খবর হলো রোহানকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দুই একর জমি দেওয়া হয়েছে ব্লাডেস অব গ্লোরি ক্রিকেট মিউজিয়ামের স্থায়ী ঠিকানার জন্য।