নাসিম রুমি: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে এক নতুন অধ্যায় রচিত হয়। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে টাইগাররা। আর সেই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। সেদিন বিশ্বকে নতুন বাংলাদেশের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন তারা। পরের বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। আগের চার তারকাসহ রিয়াদ একসঙ্গে মিলে পঞ্চপাণ্ডব হতে আরও কয়েকবছর লেগে যায়। লাল সবুজ জার্সিতে এই পাঁচ তারকার অবদান অবিস্মরণীয়।
পঞ্চপাণ্ডবের হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ঘুরে দাঁড়ানোর সূচনা করে। একসময় বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের পরিচয় ছিল ‘মিনোজ’। বড় দলের সঙ্গে লড়াই করতে পারলেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতো অনেকে। বেশিরভাগ ম্যাচে বাংলাদেশ হারতো বিনা লড়াইয়ে। সেসব অন্ধকার দিন পেরিয়ে আলোর পথে যাত্রা শুরু এই পাঁচ তারকার সৌজন্যে। তাই এই পাঁচজনের দীর্ঘদিনের সেবা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের জার্সি নম্বর তুলে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার ও বিসিবি নির্বাচক হান্নান সরকার।
বিসিবি নির্বাচক হান্নান সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই পাঁচজনের অর্জনকে সম্মান জানাতে তাদের জার্সি নম্বরগুলো তুলে রাখা যায়। নতুন কোনো খেলোয়াড় যেন এই নম্বরগুলো ব্যবহার না করে। এটি একদিকে তাদের প্রতি সম্মান জানানো হবে, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য এটি অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে থাকবে।’
পঞ্চপাণ্ডবের ক্যারিয়ারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এদের অর্জন অনেক। সাকিব তো দীর্ঘদিন বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার ছিলেন। তামিম ও রিয়াদ নিজেদের পারফরম্যান্স দিয়ে বহু রেকর্ড গড়েছেন। মুশফিক ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে দেশের ক্রিকেটে ভরসার জায়গা তৈরি করেছেন। আর মাশরাফী তো দেশের ক্রিকেটে নেতৃত্বের এক অনন্য উদাহরণ।’
বিসিবি নির্বাচক আরও উল্লেখ করে বলেন, ‘বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দল থেকে শুরু করে জাতীয় দলের উঠতি তারকারা এই পাঁচজনকে দেখে বড় হয়েছে। তাদের আদর্শ মেনেই অনেক তরুণ ক্রিকেটার নিজেদের ক্যারিয়ার শুরু করেছে। কেউ হয়তো সাকিবের মতো ৭৫ নম্বর জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন দেখে, কেউ মাশরাফির ২ নম্বর কিংবা তামিমের ২৮ নম্বর। এই জার্সি নম্বরগুলো তাদের জন্য এক ধরনের আইকন।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এ বিষয়ে চিন্তা করলে এটি ক্রিকেট ইতিহাসে একটি বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে জায়গা করে নিতে পারে বলে মনে করেন হান্নান। ‘তাদের সম্মানে জার্সি নম্বর তুলে রাখা সম্ভব হলে, এটি কেবল ক্রিকেটারদের অর্জনকে শ্রদ্ধা জানাবে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এটি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’