টাইগারদের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা নেই। আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া আছে যে, ২৭ সেপ্টেম্বর স্কোয়াড ঘোষণা হবে। তবে দল সাজানো নিয়ে আছে দুরকম কথা। বলা হয়েছে, দল চূড়ান্ত। আইসিসির বেঁধে দেওয়া সূচি মানে ২৭ সেপ্টেম্বরই তা প্রকাশ করা হবে। আসলেই কি তাই? বাংলাদেশের ওয়ার্ল্ড কাপ স্কোয়াড কি সত্যিই চূড়ান্ত?
ভেতরের খবর হচ্ছে, নাহ, মোটেই তা নয়। ক্রিকেটার নির্বাচনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। ১৫ জনের ১০-১২ জন কারা তা মোটামুটি ঠিক। তবে জন তিনেক ক্রিকেটারের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়নি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার আছেন সেই তালিকায়।
তাদের ওয়ার্ল্ড কাপ দলে থাকা নির্ভর করছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো খেলার ওপর। শুধু রিয়াদ আর সৌম্য নন, টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা আরও কজন ক্রিকেটারের ফিটনেস, ব্যাটিং ও বোলিং পাখির চোখে পরখ করতে চাচ্ছেন। নির্বাচকরা যাদের ফিটনেস ও পারফরমেন্স খুঁটিয়ে দেখতে চেয়েছেন, তাদের সবাইকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচের খেলোয়াড় তালিকায় রাখা হয়েছে। সেখানে ব্যাকআপ ওপেনার তানজিদ তামিম, পেসার তানজিম সাকিব, নুরুল হাসান সোহানও আছেন।
টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো না হলেও, আসল সত্য হলো, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১ ও ২৩ সেপ্টেম্বর প্রথম দুই ম্যাচ দেখেই টাইগারদের ওয়ার্ল্ড কাপ স্কোয়াড চূড়ান্ত করে ফেলার চিন্তা-ভাবনা ছিল। কিন্তু ২১ সেপ্টেম্বর বৃষ্টিতে প্রথম ওয়ানডে পরিত্যক্ত হওয়ায় টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের সে সুযোগ এবং সম্ভাবনা কমেছে।
এখন তারা তাকিয়ে আছেন শনিবারের দ্বিতীয় ম্যাচের দিকে। বৃষ্টিতে এই ম্যাচটিও ভেসে গেলে নির্বাচকদের কাজ কঠিন হয়ে যাবে খানিকটা।
কারণ, তাদের ক্রিকেটার বাছাইয়ের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি এখনো। যে ছয়জনকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে সেই সাকিব, মুশফিক, মিরাজ, তাসকিন, শরিফুল ও হাসান মাহমুদের ওয়ার্ল্ড কাপ দলে থাকা শতভাগ নিশ্চিত। তার বাইরে নাজমুল হোসেন শান্ত, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, তৌহিদ হৃদয়, মোস্তাফিজকে নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই। এছাড়া এশিয়া কাপে ভারতের সঙ্গে বল ও ব্যাট হাতে ভালো করা বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ আর অফস্পিনার কাম লেট অর্ডার শেখ মাহদিও ওয়ার্ল্ড কাপ স্কোয়াডে থাকার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন অনেক।
তাহলে দেখা যাচ্ছে সাকিব, তামিম, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিক, মিরাজ, তাসকিন, শরিফুল, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজ, নাসুম, শেখ মাহদি- এই ১২ জন একরকম নিশ্চিত। এখন বাকি তিনজন কারা হবেন? তা নিয়েই সংশয়। সেই তিন পজিশনের জন্য লড়াই হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ , সৌম্য সরকার, তানজিদ তামিম, পেসার তানজিম সাকিব ও উইকেট কিপার নুরুল হাসান সোহানের মধ্যে।
একজন ব্যাকআপ ওপেনার নেওয়া হবে। সেই জায়গায় সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে আছেন তানজিদ তামিম আর সৌম্য সরকার। তাদের দিকে চোখ নির্বাচকদের। যে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ভালো করবেন, তার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তবে সৌম্য ওপরে ও নিচে দুই জায়গায় খেলতে পারেন, তাই তার অ্যাডভান্টেজটা একটু বেশি। ফর্মটা ভালো না, সেটাই তার মাইনাস পয়েন্ট।
তারপরও তাকে চান কোচ। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি সৌম্যর জেন্টল মিডিয়াম পেস বোলিংটা ভারতের মাটিতে কাজে দিতে পারে, সে কারণে তার দিকে নজর। আর সৌম্য বল ও ব্যাট হাতে ভালো খেলতে পারলে বাড়তি পেসার নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও যাবে কমে। তখন তানজিম সাকিবের সম্ভাবনাও যাবে কমে। পাশাপাশি মিডল অর্ডারে রিয়াদ এখন কতটা ফিট, ব্যাট ও বল হাতে কেমন কার্যকর, ফিল্ডিংয়ে কতটা ক্ষিপ্র তার ওপর নির্ভর করছে তাকে নেওয়া না নেওয়া।
মুশফিক আর লিটন দাস দুজন কিপারের দলে থাকা শতভাগ নিশ্চিত। কিন্তু এশিয়া কাপের মতো যদি কেউ একজন আহত বা ফিটনেস সমস্যায় পড়েন, তখন কী হবে? এই ভেবে নুরুল হাসান সোহানকেও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। তার পারফরমেন্সটাও পাখির চোখে পরখ করা হবে।
যাদের কথা বলা হলো, তারা যদি পারফরম করার সুযোগই না পান, মানে খেলাই যদি না হয়, তখন নির্বাচকরা কাকে বেছে নেবেন, সেটাই এখন প্রশ্ন।