নাসিম রুমি: এক যুগ পর ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপে উড়েই চলছে ভারত। এখন পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেলে সবকটিতেই জিতেছে তারা। এখন স্বপ্ন দেখছে নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের। আর এই দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের ‘হিটম্যান’ খ্যাত ওপেনার রোহিত শর্মা।
ভারতীয় দলের হয়ে রোহিতের ক্যারিয়ার বেশ বড়ই। তবে তার পথ চলাটা কিংবা ক্রিকেটার হয়ে ক্যারিয়ারের শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না। ক্রিকেটার হওয়ার আগে ১৯৯৯ সালে এক ঘটনা বদলে দেয় রোহিত শর্মার জীবন। স্কুল জীবনে রোহিত ওপেনার নয় তিনি ছিলেন একজন অফ-স্পিন বোলার। একটি টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময় তার পারফরম্যান্স মুম্বাই ক্রিকেটার সিদ্ধেশ লাডের বাবা কোচ দীনেশ লাডের নজর কেড়েছিল। তিনি রোহিতের পারফরম্যান্সে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে রোহিতের বাবা-মায়ের সঙ্গে খেলায় তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কথা বলতে চেয়েছিলেন। রোহিত মুম্বাইয়ের বরিভালি এলাকায় তার মামা এবং দাদা-দাদির সঙ্গে থাকতেন এবং যখন তার মামার সঙ্গে লাডে দেখা করতে আসেন তখন তিনি বলেন, কোচ রোহিতকে স্বামী বিবেকানন্দ স্কুলে ভর্তি করার জন্য বলেছেন।
এ প্রসঙ্গে ভারতীয় এক গণমাধ্যমে লাডে বলেন, ‘রোহিত যেই স্কুলে পড়ে সেই স্কুলের ৩০ রুপি এবং আমি যেই স্কুলে রোহিতকে ভর্তি করাতে বলেছেন সেই স্কুলের মাসিক ফি ছিল ২৭৫ রুপি। এই স্কুলের খচর চালানোর মতো অবস্থা ছিল না রোহিতের বাবার। তখন আমি ঐ স্কুলের পরিচালককে অনুরোধ করেছিলাম যে তারা যেন রোহিতকে কোনো ফিস ছাড়াই পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। তখন সেই পরিচালক আমাকে জিগ্যেস করে কেন আমি এই ছাত্রকে ফ্রি পড়াতে অনুরোধ করছি। কিন্তু আমি জানতাম তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এবং ভালো ক্রিকেট খেলে। তাই আমি তাকে হাত ছাড়া করতে চাইছিলাম না।’
এটি তার রোহিতের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল। কারণ পরে তিনি দীনেশ লাডের অধীনে দারুণ ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে উঠেছেন এবং পরবর্তী সময়ে সিনিয়র দলে যোগ দেওয়ার আগে তিনি অনূর্ধ্ব -১৯ ক্রিকেট এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর তো আর ফিরে তাকাতে হয় নাই ভারতীয় অধিনায়ককে। এর পরের গল্প সবারই জানা। তিন ফরম্যাটে ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য তিনি। বিশ্বকাপে চলতি আসরে তার নেতৃত্বে ভারত এখন শিরোপার দোরগোড়ায়।