নাসিম রুমি: ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩৫ রানে থামিয়ে সহজ জয়ের পথে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ জিততে শেষ ৪২ বলে ৩৪ রান করতে হবে তাদের; হাতে তখনও ৬ উইকেট। এমন ম্যাচে হাল ছেড়ে দেয় সবাই। তবে সেটি করেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লড়াইটা চালিয়ে গেছে শেষ ওভার পর্যন্ত।
জন্ম দিয়েছে কতশত নাটকীয়তার। প্রতিটি বলে বলেই রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত কপাল পুড়তে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকারই। তবে না, শেষ পর্যন্ত সেটি হতে দেননি রাবাদা-জেনসেন। কঠিন চাপ জয় করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছেন তারা। নিশ্চিত করেছেন সেমিফাইনাল। প্রোটিয়ারা জয় তুলেছে ৫ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে।
আগের দুটি আইসিসি বিশ্বকাপে জায়গা হয়নি দু’বারের বিশ্বকাপজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে সেসব পেছনে ফেলে এবার নতুন এক গল্প লিখতে চেয়েছিল ক্যারিবিয়রা। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের মোহ ভুলে নিজের দেশের ক্রিকেট ঐতিহ্য ফেরাতে বিশ্বকাপ জয়ের পণ করে মাঠে নেমেছিল, রোভম্যান পাওয়েল, নিকোলাস পুরান ও আন্দ্রে রাসেলরা। বিশ্বকাপ মিশনটা দারুণ কাটছিলও তাদের। তবে সেই যাত্রার মাঝ পথেই এবার থামতে হলো তাদের।
ক্যারিবিয়দের স্তব্ধ করে সেমিফাইনালে পা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সুপার এইটে সেমি নিশ্চিতের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩৫ রানে থামিয়ে ৩ উইকেটের জয় তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ধরে রেখেছে চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত না হারার রেকর্ডটা।
অথচ, সেমি নিশ্চিতের ম্যাচে লড়াই করার মতো পুঁজিও স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তাদের ইনিংস থামে মাত্র ১৩৫ রানে। পুঁজি ছোট হলেও লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রেজা হেন্ড্ররিকস ও কুইন্টন ডি কককে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাসেল। তবে সেই চাপ তারা ধরে রাখতে পারেনি বৃষ্টির কারণে। ২ ওভারে ২ উইকেট খরচায় ১৫ রান তোলার পর শুরু হয় বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি থামলে আর চাপটা ধরে রাখতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বৃষ্টির পর ৩ ওভার কমে ম্যাচ নেমে আসে ১৭ ওভারে। সঙ্গে প্রোটিয়াদের লক্ষ্য কমে হয় ১২৩। এরপর পরিস্থিতি বুঝেই ব্যাট চালিয়েছে প্রোটিয়ারা। অযাচিত ঝুঁকি নেয়নি। মাঝে এইডেন মার্করাম ১৫ বলে ১৮ রান ও হেনরিখ ক্লাসেন ১০ বলে ২২ রান করে ফিরলেও ততক্ষণে জয়ের ভিত গড়া হয়ে গেছে তাদের। তবে এরপর ম্যাচ দেখেছে বহু নাটকীয়তা। তবে সেই নাটকের শেষ দৃষ্যপটে জয়টা হয়েছে প্রোটিয়াদেরই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা চাপ প্রয়োগ করলেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেননি। দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। টানা তিন জয়ে গ্রুপ-চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিশ্চিত করে সেমির টিকিট। যাতে করে বিদায় নিশ্চিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই গ্রুপ থেকে সেমির টিকিট আগেই কেটে ফেলেছে ইংল্যান্ড।