আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠনের পর দেশটির নারী ক্রিকেটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের তিন বছর মতো হতে চলল। নির্বাসিত হওয়ার পর তখনকার জাতীয় নারী দলের অনেকেই এখন বিদেশে। এবার সেই ক্রিকেটারদের একটা বড় অংশ অস্ট্রেলিয়ায় একটি শরণার্থী দল গঠনে সহায়তা করার জন্য আইসিসির কাছে চিঠি দিয়েছেন।
২০২০ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) চুক্তিতে ছিলেন, এমন ১৭ নারী ক্রিকেটার গত শনিবার আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলেকে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমর্থন ও নির্দেশনা চেয়েছে তারা, কেননা এসিবিও তাদের স্বীকৃতি দিতে পারছে না।
আফগানিস্তানের সরকারি নীতির কারণে এসিবি ও আইসিসি তাদের আফগানিস্তান জাতীয় দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারবে না। তাই তারা এসিবির ব্যানারে খেলার বা আফগান জাতীয় দল হিসেবে ডাকার দাবিও করেননি। বরং শরণার্থী দল হিসেবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ইস্ট এশিয়ান ক্রিকেট অফিসের মাধ্যমে যেন তাদের পরিচালনা করা হয়। যাতে করে তারা সকল আফগান নারীদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, যারা ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু আফগানিস্তানে খেলতে পারে না।
চিঠিতে নিজেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে মেয়েরা লিখেছেন, ‘আমরা আফগানিস্তান নারী দলের পূর্বে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়। আইসিসি পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের অর্জনে আমরা গর্বিত ও রোমাঞ্চিত। সেমিফাইনালে ওঠার জন্য রাশিদ খান ও তার দলকে আমরা অভিনন্দন জানাতে চাই। গভীর দুঃখের বিষয় যে, আমরা নারী হিসেবে পুরুষ ক্রিকেটারদের মতো আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারি না।’
এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে এসিবির উদ্যোগ কাবুলে নারী ক্রিকেটারদের একটি ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ২৫ জন ক্রিকেটারকে চুক্তিভুক্ত করা হয়েছিল। প্রথমে তাদের ওমান সফরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা আর হয়নি, ৯ মাস পরই তালেবান সরকার গঠনের পর আফগানিস্তানে মেয়েদের খেলাধুলায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, কড়াকড়ি করা হয় মেয়েদের উচ্চশিক্ষায়ও।
এদিকে আফগানিস্তানের নারী ফুটবলার ও ক্রিকেটারদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে। যুক্তরাজ্য ও কানাডাতেও থাকে কয়েক জন। তাদের অধিকাংশই স্থানীয় ক্লাবে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা পেলেও তারা নিজেদের কোনো প্রতিনিধিত্বকারী দল গড়তে পারেনি।
বর্তমানে আইসিসি চাইলেও আফগানিস্তান নারী দলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে পারবে না। কারণ, আইসিসির কোনো সদস্য তাদের কোন দলকে স্বীকৃতি দেবে, তার এখতিয়ার সম্পূর্ণ সংশ্লিষ্ট বোর্ডের।