কয়েক সপ্তাহ আগেইও ভারতের টি-টোয়েন্টি লাইনআপে বিরাট কোহলির জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতো। অথচ ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটার তিনি।
তবে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ঠিকই ঘুরে দাঁড়ালেন ‘কিং কোহলি’। খেললেন অবিশ্বাস্য এক ইনিংস; প্রায় একাই ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি। এমনকি নিজের পারফরম্যান্স দেখে তিনি নিজেই বিস্মিত।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে আজ পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল রোহিতবাহিনী। সেখান থেকে হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে ১১৩ রানের জুটি গড়ে ভারতকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখান কোহলি।
হার্দিক ৩৭ বলে ৪০ রান করে বিদায় নিলেও কোহলি হাল ছাড়েননি। শেষদিকে এমনকি জয়ের পাল্লা পাকিস্তানের দিকেই হেলে ছিল। শেষ ৩ ওভারে ভারতের সামনে লক্ষ্য ছিল ৪৮ রানের। কিন্তু সেখান থেকে দুর্দান্ত সব শট খেলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন কোহলি। শেষ বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন জয়সূচক রানটি করার সময় ৫৩ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কোহলি। যা তাকে এনে দেয় ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
ম্যাচ শেষে আবেগী হয়ে পড়েন কোহলি। সতীর্থরা তাকে ঘিরে উদযাপনে মাতেন এবং তাকে উপরে তুলে ধরেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আবেগ দমিয়ে রাখতে না পেরে কেঁদেও ফেলেন কোহলি। এ যেন দীর্ঘ বিরতির পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার মতো। ম্যাচ শেষে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোহলি ঠিকমতো কথাই বলতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে স্বীকারও করে নিলেন যে, তিনি অনুভূতি প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।
কোহলি যখন কথা শুরু করলেন, দর্শকসারি থেকে তার নামে রীতিমতো গর্জন শোনা যাচ্ছে। তাই শুরুতে ওই প্রসঙ্গ উল্লেখ করলেন তিনি, ‘এটা অবাস্তব পরিবেশ। আমি বুঝতে পারছি না কীভাবে এটা হলো। আমি সত্যিকার অর্থেই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ‘
নিজেকে খানিকটা গুছিয়ে নিয়ে কীভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করলেন, তা নিয়ে কথা বলেন কোহলি, ‘হার্দিক পান্ডিয়ার বিশ্বাস ছিল শেষ পর্যন্ত থাকতে পারলে আমরা এটা (জিততে) পারব। শাহিন (শাহ আফ্রিদি) যখন প্যাভিলিয়ন এরিয়া থেকে বল করতে শুরু করল, ঠিক তখনই তার বলে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। হারিস (রৌফ) তাদের মূল বোলার এবং আমি (তার বলে) দুটা ছক্কা হাঁকালাম। ‘
‘হিসাব খুবই সহজ ছিল। (মোহাম্মদ) নওয়াজের একটা ওভার বাকি ছিল। তাই যদি আমি হারিসের ওভারে মেরে খেলি, তাহলে তারা চাপে পড়ে যাবে। ৮ বলে ২৮ রান থেকে (দুই ছক্কায়) লক্ষ্যটা ৬ বলে ১৬ রানে নেমে আসে। আমি আমার লক্ষ্যে অটুট থাকার চেষ্টা করে গেছি। প্রথমটি (ছক্কা) স্লোয়ার বলে ব্যাক অব দ্য হ্যান্ডে (লন-অনে) খেলেছি। ‘
আজকের ইনিংসটিকে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা বলেও মন্তব্য করেছেন কোহলি। এমনকি মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা ইনিংসের চেয়েও আজকেরটাকে এগিয়ে রাখলেন তিনি, ‘গতকাল পর্যন্ত মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা ইনিংসটি ছিল আমার সেরা। তবে আজকেরটিকে আমি কিছুটা এগিয়ে রাখবো। ‘