মাত্র চার মাস আগে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া ইংল্যান্ড দল কি দুঃস্বপ্নেও ভেবেছিল বাংলাদেশে এসে হোয়াইটওয়াশড হয়ে ফিরে যেতে হবে! কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে সেটাই। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবকটি জিতে নিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ধোলাই করে ছাড়ল বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশের ক্রিকেটের ঘর খ্যাত মিরপুরে সিরিজের শেষ ম্যাচে টিম টাইগার পেয়েছে ১৬ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়। ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস। সিরিজসেরা নাজমুল হোসেন শান্ত।
মিরপুর শেরেবাংলায় রান তাড়ায় নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। অভিষিক্ত স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে ফিল সল্টকে (০) স্টাম্পড করে দেন লিটন দাস। পরের ওভারে তাসকিনের বলে ডেভিড মালানকে এলবিডাব্লিউ দিলেও তিনি রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। অধিনায়ক জস বাটলারের সঙ্গে তার জুটি জমে ওঠে। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৪৭ রান। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ইংল্যান্ড। ৪৭ বলে ৫৩ করা ডেভিড মালানকে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করে ৭৬ বলে ৯৫ রানের এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান। এটা টি-টোয়েন্টিতে তার শততম উইকেট। পরের বলেই মিরাজের দারুণ থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান ৩১ বলে ৪০ রান করা বাটলার।
ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। শেষ পাঁচ ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন হয় ৫১ রানের। ১৭তম ওভারে এসেই এক ছক্কায় ৯ রান করা মঈন আলীকে ফেরান তাসকিন। সীমানায় ক্যাচ নেন মিরাজ। একই ওভারের শেষ বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বেন ডাকেটকে (১১) বোল্ড করে দেন এই তারকা পেসার। ১৮ বলে চাই ৩৬ রান। ১৯তম ওভারে স্যাম কারেনকে (৪) তানভীরের তালুবন্দি করেন সাকিব। ১২৮ রানে পতন হয় ষষ্ঠ উইকেটের। শেষ ওভারে দরকার হয় ২৭ রানের। তানভীরের করা প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি মারেন ক্রিস ওকস। তবে ওই পর্যন্তই। ১৪২ রানের বেশি করতে পারেনি ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নিল ১৬ রানে।
এর আগে আজ মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ১৫৮ রান তোলে বাংলাদেশ। ৫৫ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে দারুণ শুরু এনে দেন লিটন দাস আর রনি তালুকদার। ২২ বলে ৩ চার ২৪ রান করা রনি তালুকদারকে আদিল রশিদ কট অ্যান্ড বোল্ড করলেও লিটন আজ বড় স্কোরের দিকে এগিয়ে যান। ৪১ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে তার জুটি জমে ওঠে। ফিফটির পর একটা সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া লিটন আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। একটা সময় তার সেঞ্চুরিও অসম্ভব মনে হচ্ছিল না।
তবে লিটনের ৫৭ বলে ১০ চার ১ ছক্কায় ৭৩ রানের ইনিংস থামে ক্রিস জর্ডানের বলে ফিল সল্টের তালুবন্দি হয়ে। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। শান্তর সঙ্গে ৫৮ বলে ৮৪ রানের জুটি ভাঙতেই রান তোলার গতি কমে আসে। উইকেটে আসেন অধিনায়ক সাকিব। ব্যক্তিগত ৪০ রানে শান্তকে আম্পায়ার এলবিডাব্লিউ দিলেও তিনি রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। শেষদিকে বেশি রান ওঠেনি। হাতে ৮ উইকেট থাকলেও শেষ ৫ ওভারে আসে মাত্র ২৭ রান! বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১৫৮ রান তোলে। শান্ত অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৪৭ রানে আর সাকিব ৬ বলে ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।