নাসিম রুমি: একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিশ্বকাপের চলমান আসরে বাংলাদেশ দল বাজে পারফরম্যান্স করায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) ডাক ও রেজিস্ট্রারযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার শাহ্ রিয়ার এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের (পুরুষ) অধিনায়ক সকিব আল হাসানকে বিবাদী করা হয়েছে।
আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহ্ রিয়ার লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি গন্যমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, মাঠের খেলার বাইরে এবারের বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান টুর্নামেন্টের মাঝে দলকে ফেলে দেশে এসেছিলেন অনুশীলন করতে।
এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে খেলা চলাকালীন বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং করে সমালোচিত হয়েছিলেন, যা কাম্য নয়। সাকিবের মতো একজন উঁচু মাপের খেলোয়াড়ের কাছে সমগ্র জাতি আরও পেশাদারত্ব ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে এমন কোনো বোর্ড সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না, যারা সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ দল গড়েছিল তাদেরই দেশসেরা ওপেনারকে দলের বাইরে রাখা হয়। যেই ওপেনারকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকে নিয়ে অবসর থেকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন।
বিশ্বকাপ শুরুর দুই মাস আগে নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল দলের দায়িত্ব ছাড়েন।
সেই ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দলের বৃহত্তর স্বার্থে বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করে সময়োপযোগী কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আবার ওপেনার লিটন দাসও ব্যক্তিগত কারণে (পুত্র সন্তানের জন্ম) দুইবার খেলা চলাকালীন দেশে এসেছেন।
পেশাদার দলে মানবিক কারণে একবার আসা মেনে নেওয়া যায়। তাই বলে একাধিকবার। ম্যাচ গুরুত্বহীন হলেও পেশাদার টিমে এমনটা চলতে পারে না। ম্যানেজমেন্টের এমন শিথিল মানসিকতা চূড়ান্ত পেশাদার সময়ে আরও বেমানান। অথচ এক্ষেত্রেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
সাংবাদিকদের কাছে ৩ নং নোটিশ প্রাপক বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা অনেক আন্ডার প্রিপেয়ার্ড ছিলাম।’
এখন এসব অভিযোগ দিয়ে আসলে লাভ হবে না। তবে অবশ্যই প্রস্তুতি কম ছিল। তাহলে আইসিসি পুরুষ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩ এ সাফল্য পেতে জাতীয় দলের প্রধান কোচ, কোচিং স্টাফ, টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচক কমিটি এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কেন প্রস্তুতি সঠিকভাবে নিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি? ফলে আপনারা বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের ব্যর্থতার দায়ভার কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।
নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ কোচিং স্টাফ ও নির্বাচক কমিটি বাতিল করবেন। একই সঙ্গে আইসিসি পুরুষ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩ এ ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবেন।
এছাড়া উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে নিজস্ব কোচ তৈরি, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলো যে ধরনের উইকেটে হয় তার অন্তত কাছাকাছি মানের উইকেটে ঘরোয়া লিগে আয়োজন, স্কুল ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও প্রশিক্ষণের আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
একই সঙ্গে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার স্বায়ভার কাঁধে নিয়ে সমগ্র জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। অন্যথায় প্রচলিত আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।