অ্যান্টিগায় ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে স্বাগতিকদের একই ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ৬৪ রান দিয় তুলে নিয়েছেন ছয়টি উইকেট। তাসকিন তাণ্ডবে মাত্র ১৫২ রানে শেষ হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংস। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ফাইফারের কীর্তি স্পর্শ করলেন তাসকিন। টেস্টে ৬ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের পঞ্চম পেসার তিনি।
স্বামীর এমন আগুনে বোলিংয়ের পর তাকে নিয়ে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্য ফেসবুকে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন তাসকিনের স্ত্রী সৈয়দা নাঈমা রাবেয়া।
ব্যাটিংয়ের সময় তাসকিন মাথায় বলের আঘাত পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী। গতকাল ফজর আজানের একটু আগে জানতে পারলাম আমার স্বামী কাঁঠের বল দ্বারা মাথায় আঘাত পেয়েছেন। যদিও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। তাও যারা খেলে থাকেন তারা বুঝতে পারে এর ব্যথাটা কেমন হতে পারে। খবরটা শোনার পর খুব কষ্ট পেলাম, কারণ আমি তার জন্য দুয়া করা ছাড়া কিছু করার ছিল না। আমি তার থেকে অনেক দূরে, তবুও তার ব্যথা অনুভব করতে পারছি। তারা খারাপ সময় বা অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও পরিবারকে কাছে পায় না।’
এরপর টাইগার পেসারকে নাকি খেলতেও নিষেধ করেছিলেন তার স্ত্রী, ‘আমি তাকে বলেছিলাম, যদি ঘাড় এবং মাথা ব্যথা না কমে দয়া করে খেলো না। ওষুধ নিয়ে আর কতটুকুই ব্যথা সারে? ওর সাথে কথা বলার পর ফজর নামাজ আদায় করে আরো দুই রাকাত বেশি নামাজ আদায় করলাম, যাতে সে ভালো থাকে। আল্লাহ তাকে যেন হেফাজত করেন এবং শুকরিয়া আদায় করলাম যে এরচেয়েও বড় কোনো ব্যথা থেকে আল্লাহ হেফাজত করেছেন।’
তবে তাসকিনের মাঠের পারফরম্যান্সে ঠিকই আবার খুশি হয়েছেন স্ত্রী নাঈমা, ‘যেখানে আমি চাচ্ছিলাম না তাসকিন খেলুক তার ব্যথা নিয়ে! সেখানে আজ সে ৬টা উইকেট পেয়েছে এবং ২টি মিসও হয়েছে। এটাও ভালোর জন্যই (ইনশাআল্লাহ)। এমন অনেক গল্প আছে। আজ এটা শেয়ার করার কারণ হলো শুধু আমার হাসব্যান্ড বলে না। অনেক প্লেয়াররাই অনেক সময় অনেক ব্যথা নিয়ে খেলেন। কেউ ইচ্ছা করে হারতে চায় না বা খারাপও করতে চায় না। আপনারা তো খালি মাঠের গল্প দেখেন ও শুনেন, আর এটা ছিলো মাঠের বাইরের অজানা ঘটনা।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৬টি টেস্ট খেলেছেন তাসকিন। এর আগে তিনবার এক ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়ার কীর্তি থাকলেও, প্রথম পাঁচ উইকেট পেলেন গতকাল। যদিও ওয়ানডেতে দু’বার ৫ উইকেট নেওয়ার নজির ছিল তাসকিনের। ২৯ বছর বয়সী এই পেসার ১৬ টেস্টে ৪৬ উইকেট শিকার করেছেন।