সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দারুণ আলোচনায় ছিলেন চিটাগাং কিংসের হোস্ট ইয়েশা সাগর। তবে টুর্নামেন্টজুড়ে চিটাগংয়ের সমর্থনে স্টেডিয়ামে দাঁপিয়ে বেড়ালেও শেষটা সুন্দর করে যেতে পারেননি কানাডার এই মডেল। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার আগেই ছাড়েন বাংলাদেশ। চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিস্ফোরক সব অভিযোগ আনেন ইয়েশা। এবার সেই অভিযোগের জবাব দিল চিটাগং।
আজ বুধবার গণমাধ্যমকে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করে বিবৃতি দেয় চিটাগং। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলাকালীন চিটাগাং কিংসের হোস্ট হিসেবে কাজ করা ইয়েশা সাগরের অপেশাদারী আচরণের জন্য আমরা হতাশ এবং এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো পূর্বানুমতি বা অনুমোদন ছাড়াই বাংলাদেশ ছেড়েছেন ইয়েশা, যা তার সঙ্গে করা চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।’
চিটাগংয়ের আচরণে নিজে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন এমন দাবি করেছিলেন ইয়াশা। সেই অভিযোগ উড়িয়ে চিটাগং বলেছে, ‘ইয়েশা এখন দাবি করছেন যে, তিনি বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, সত্যিই যদি এমনটি হয় তাহলে কেন তিনি এক মাসেরও বেশি সময় এখানে ছিলেন? কেন তিনি টুর্নামেন্ট সম্পর্কিত সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন? এটা স্পষ্ট যে তার হঠাৎ দেশ ছাড়ার কারণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নয়। চিটাগাং কিংসের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করে ভারতে লিজেন্ডস-৯০ টুর্নামেন্টে যোগ দেওয়া তার পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত ছিল। তার এই ইচ্ছাকৃত কাজটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সুনামকেই ক্ষুণ্ন করে না বরং তার পেশাদার সততাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।’
ইয়েশার বিবৃতি
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইয়েশা ১৯ জানুয়ারী চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে তার পাসপোর্ট জমা দেন। উল্লেখ্য, ২৪ এবং ২৫ জানুয়ারী ছিল সরকারি ছুটির দিন। ২৪ জানুয়ারী দল ঢাকায় পৌঁছে তার ভিসার কার্যক্রম শুরু করে। সরকারি ছুটি এবং প্রয়োজনীয় সময় বিবেচনায় ২৮ জানুয়ারী তার পাসপোর্ট ফেরত চাওয়া অযৌক্তিক ছিল।’
ইয়েশা ফেসবুকে বলেছিলেন, চিটাগং চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো পারিশ্রমিক দেয়নি বা পুরো অর্থ দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে চিটাগংয়ের ভাষ্য, ‘তার (ইয়াশা) সঙ্গে করা চুক্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, চুক্তি লঙ্ঘনের ফলে জরিমানা বা তার চুক্তি স্থগিত করা হবে। আসরের মাঝামাঝি ফ্র্যাঞ্চাইজি ছেড়ে চলে যাওয়া, চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া এবং ছাড়পত্র ছাড়াই অন্য কোনো ইভেন্টে জড়িত হওয়া তার পেশাদারিত্ব এবং চুক্তির শর্তাবলীর স্পষ্ট লঙ্ঘন। চুক্তি অনুসারে তার শেষ ৫০% অর্থ লিগের শেষ সপ্তাহে দেওয়ার কথা ছিল। তবে চুক্তির শর্তাবলী না মেনে তিনি তার পাসপোর্ট ফেরত দিতে চাপ দেন। পরবর্তীতে তিনি কাজ শেষ না করেই পালিয়ে যান।’
চিটাগংয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, ইয়েশার আচরণ অপেশাদার, ‘ইয়েশা সাগরের চুক্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, অসদাচরণ বা অবৈধ কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ফ্র্যাঞ্চাইজি তার চুক্তি বাতিল করার অধিকার রাখে। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তাদের না জানিয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ছাড়া এবং বিষয়টি সমাধানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও অস্বীকৃতি জানানো তার পেশাদারিত্বের অভাব এবং চুক্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদশন করে। ইয়েশা সাগর যদি বিশ্বাস করেন যে, তিনি সৎ থেকে কাজ করেছেন, তাহলে তার বাংলাদেশে থাকা উচিত ছিল, আমাদের আইনি নোটিশের জবাব দেওয়া উচিত ছিল এবং বিপিএল চলাকালীন অন্য লিগে চলে যাওয়ার পরিবর্তে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়া উচিত ছিল।’