নাসিম রুমি: আফগানিস্তানের বিপক্ষে লজ্জাজনকভাবে হেরে গেছে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ গাজাফারের ঘূর্ণিতে চোখে যেন সর্ষেফুল দেখল টাইগাররা। ২৫ বলের মাঝে হারিয়েছে শেষ ৭ উইকেট। আর এতেই শান্তদের হার ৯২ রানে।
অথচ সহজ জয়ের পথেই ছিল টাইগাররা। ২৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২৫ দশমিক ৫ ওভারে ২ উইকেটেই তুলেছিল ১২০ রান। অথচ পরের ২৩ রান তুলতে গিয়েই গুটিয়ে গেছে দল। ৩৪ দশমিক ৩ ওভারে মাত্র ১৪৩ রানে শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।
শারজায় তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে গতকাল (বুধবার) রাতে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। যেখানে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি।
আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আফগানদের। তাসকিন আর মোস্তাফিজের তোপে মাত্র ৭১ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। একটা সময় মনে হচ্ছিল হয়তো দ্রুতই গুটিয়ে যাবে তারা। তবে সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন নাবি।
দারুণ সঙ্গ দেন হাশমতুল্লাহ শাহিদি। দু’জনে গড়েন ১২২ বলে ১০৪ রানের কার্যকর জুটি। সুবাদে ৪৯ দশমিক ৪ ওভারে ২৩৪ রান তুলে আফগানিস্তান। ৯২ বলে ৫২ করে আউট হন আফগান অধিনায়ক। ৭৯ বলে ৮৪ করে আউট হন নাবি।
তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান নেন সমান চারটা করে উইকেট। অন্যটা শরিফুল ইসলামের।
মাঝারি মানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই তানজিদ তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ দশমিক ১ ওভারে মাত্র ১২ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তবে দলকে ভালো শুরু এনে দেন সৌম্য সরকার। যদিও ফিরেছেন ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে।
অধিনায়ক শান্তের সাথে ৫৪ বলে ৫৩ রানের জুটি ভেঙে সৌম্য আউট হন ৪৫ বলে ৩৩ করে। ১২ ওভারে ৬৫ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের। এরপর অধিনায়কের সাথে মিলে হাল ধরেন মেহেদী মিরাজ।
দু’জনেই দায়িত্ব নিয়ে বুঝে-শুনে খেলতে থাকেন। তাদের জুটিও পঞ্চাশ পেরিয়ে যায়। বাংলাদেশ দলের সংগ্রহও পৌঁছে যায় তিন অংকের ঘরে। ২৫ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১১৮ রান।
এরপরই যেন সব হিসেব বদলে যায়। ২৬তম ওভারে বল করতে এসে গাজাফার ফেরান থিতু হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ অধিনায়ককে। শান্ত ফেরেন ফিফটি থেকে তিন রান দূরে। ৬৮ বলে ৪৭ করে। এরপর তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে আরো ১২ রান যোগ করেন মিরাজ।
এরপর যা হয়, তা হয়তো ভুলেই যেতে চাইবেন হৃদয়-মিরাজরা। ৫১ বলে ২৮ রান করা মিরাজকে ৩০ দশমিক ৪ ওভারে ফেরান গাজাফার। পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২) রশিদ খানের শিকার। তবে আসল ধাক্কা আসে ৩৩তম ওভারে।
ওই ওভারেই ৩ উইকেট তুলে নেন গাজাফার। প্রথম বলেই মুশফিকুর রহিম (১), এরপর ৩২ দশমিক ৫ ওভারে রিশাদ হোসেনকে (১) ও শেষ বলে তাসকিনকে ফেরান গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে। ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন গাজাফার।
এরপর শেষ উইকেট হিসেবে শরিফুল ইসলামকেও ফেরান গাজাফার। সব মিলিয়ে ২৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। মাঝে তাওহীদ হৃদয়কে (১১) শিকার করেন রশিদ খান। বাংলাদেশের হয়ে ৭ ব্যাটারই আউট হয়েছেন এক অংকের ঘরে।
এই হারে সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ।