দিনে দিনে ব্যাটারদের খেলা হয়ে ওঠা ক্রিকেটে উইকেটই রীতিমতো সোনার হরিণ, সেখানে হ্যাটট্রিক তো আরও বেশি বিরল। সে হ্যাটট্রিকই তিনি করেছেন একাধিকবার। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, তার ঝুলিতে হ্যাটট্রিক আছে ৫ বার!
আগে রেকর্ডটা ছিল ওয়াসিম আকরামের দখলে। তিনি তিন বলে তিন উইকেট নিয়েছিলেন ৪ বার। টেস্ট আর ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করেছেন দু’বার করে। তবে সে রেকর্ডটা এই বোলার নিয়ে গেছেন নিজের দখলে। তিনি লাসিথ মালিঙ্গা। ক্যারিয়ারজুড়ে এই কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার তার ইয়র্কার ও নিখুঁত স্লোয়ার ডেলিভারির জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন। হ্যাটট্রিকের রেকর্ড তাকে ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছে। এই কীর্তি যে আর কারও ঝুলিতে নেই!
তার প্রথম হ্যাটট্রিকটা এসেছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এটা স্রেফ হ্যাটট্রিক নয়, বরং তার চেয়েও বিশেষ কিছু। কারণ, এটি ছিল টানা চার বলে চার উইকেট নেওয়ার বিশ্বরেকর্ড, বিশ্বকাপে এমন কিছুর দেখা আগে কখনও মেলেনি। শন পোলককে বিদায় করে শুরু, এরপরও অ্যান্ড্রু হল, জ্যাক ক্যালিস আর মাখায়া এনটিনিকে আউট করেন তিনি।
২০১১ সালের বিশ্বকাপের মঞ্চে আবারও এক হ্যাটট্রিক করেন তিনি। তার এবারের কীর্তি আসে কেনিয়ার বিপক্ষে। তন্ময় মিশ্র, পিটার অনগন্ডো আর শেম এনগোচেকে বিদায় করে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকটা করেন তিনি।
সে বছরই পরের হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়ে যান। এবার তার প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের মাঠে এই ম্যাচে মিচেল জনসন, জন হেস্টিংস আর শাভিয়ের ডোহার্টিকে বিদায় করে হ্যাটট্রিকের হ্যাটট্রিক তুলে নেন তিনি।
আগের তিন হ্যাটট্রিক ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটে, এরপর হ্যাটট্রিকের মঞ্চ হিসেবে তিনি বেছে নেন টি-টোয়েন্টিকে। তার প্রথম টি-টোয়েন্টি হ্যাটট্রিকটা আসে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৭ সালে তিনি সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিনি টানা তিন বলে আউট করেন তৎকালীন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজকে।
সবশেষ এবং পঞ্চম হ্যাটট্রিক আসে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে। এই ম্যাচে তিনি আবারও প্রমাণ করেন, বয়স কেবলই সংখ্যা। ১২৫ রানের লক্ষ্যে নামা নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভালো ছিল, তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারে কলিন মুনরো, হামিশ রাদারফোর্ড, কলিন ডি গ্রান্ডহোম ও রস টেলরকে বিদায় করে নিউজিল্যান্ডকে ধসিয়ে দেন।
সবশেষ হ্যাটট্রিকে তিনি পেছনে ফেলেন ওয়াসিম আকরামকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫ হ্যাটট্রিক নিয়ে তিনি উঠে যান অনন্য উচ্চতায়।
হ্যাটট্রিক তো বটেই, আরও একটা রেকর্ড তাকে সবার চেয়ে আলাদা করে রেখেছে। চার বলে চার উইকেট একাধিকবার নেওয়া একমাত্র বোলার হয়ে আছেন তিনি।