সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর তদন্তের স্বার্থে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। তার পর থেকে চারদিকে মিশ্র প্রতিক্রয়ার তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় সতীর্থদের পাশে পাচ্ছেন সাকিব। বুধবার রাতে বিমানবন্দরে নেমে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাকিবের ইস্যুটি নিয়ে কথা বলবেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাকিস্তানকে দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পরপরই তিনি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে মুঠোফোনে পুরো দলকে অভিনন্দন জানান। ওই সময় শান্তদের নিজের বাসভবনে আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
শান্তর কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে সাকিবের ব্যাপারে কথা বলবেন কিনা? উত্তরে শান্ত বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তো কথা হয়েছে। উনি দেখা করতে চেয়েছেন। সাকিব ভাইয়ের বিষয়টি ভিন্ন একটি বিষয়। প্রত্যেকটা খেলোয়াড় সাকিব ভাইয়ের পাশে আছে। আমরা সবাই জানি সাকিব ভাই খেলার জন্য কতখানি নিবেদিত। সব সময়ই দলের ফলাফলে অবদান রাখতে মুখিয়ে থাকেন। অবশ্যই যখন দেখা হবে, সুযোগ থাকলে এটা নিয়ে কথা হবে। এতটুকু বলতে পারি, আমরা সবাই সাকিব ভাইয়ের পাশে আছি।’
রাওয়ালপিন্ডিতে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। শান্তরা দুই ভাগে ফিরছেন। রাত সাড়ে এগারোটায় শান্ত-লিটনসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার দেশে ফিরেছেন। বাকিরা রাত আড়াইটার ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন। পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে ঐতিহাসিক সিরিজ জিতে বিমানবন্দরে নেমে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজটিকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন তিনি, ‘আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে সব থেকে বড় অর্জন। এটা কেবল আমার ব্যক্তিগত কথা নয়, দলে যারা আছেন সবাই এটা বিশ্বাস করে। সব মিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো লাগছে।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে বাংলাদেশ দল ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারছিল না। এই কারণে কিছুটা আগে ভাগেই পাকিস্তান সফরে চলে যায় তারা। এই আগে যাওয়াটাই বাড়তি সুবিধা হিসেবে নিজেদের পক্ষে এসেছে বলে মনে করেন শান্ত, ‘আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি যাওয়ার আগে, তারপর ওখানে গিয়ে যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। তারপর প্রত্যেকেটা ক্রিকেটারের মাইন্ডসেট, স্কিল খুব ভালো অবস্থায় ছিল। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ জেতা। আমরা নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগে পাকিস্তানে গিয়েছিলাম, ওইটা আমাদের বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। প্লেয়াররা অনেক কষ্টা করেছে, কোচিং স্টাফ যারা ছিলো তারা অনেক কষ্ট করেছে, দারুণ সব পরিকল্পনা আমাদের দিয়েছেন। আমি বলবো, সবাই টিম হিসেবে খেলার চেষ্টা করে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করেছে।’
দেশে ফিরে খুব বেশি বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে চলতি মাসের ১৫ তারিখে ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা হবে তারা। পাকিস্তানে ভালো খেলার আত্মবিশ্বাস ভারতে কাজে দেবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘অবশ্যই এমন সিরিজ জিতলে আত্মবিশ্বাস প্রত্যেকেটা খেলোয়াড়ের মধ্যে থাকবে। ভারত সিরিজ, অবশ্যই কঠিন একটি সিরিজ। আমাদের নতুন করে আবার পরিকল্পনা করতে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে। এই মুহূর্তে দলের যা অবস্থা, যদি সেরাটা দিতে পারি, তাহলে ভারতে ভালো করা সম্ভব।’