English

25 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

অবিশ্বাস্য জয়ের পর যা বললেন তামিম ইকবাল

- Advertisements -

স্বাগতিক বাংলাদেশ ও সফরকারী আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে এক রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। আজ বুধবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ২১৬ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় আফগানরা। আফিফ হোসেন ও মেহেদি মিরাজের ব্যাটে ভর করে ৪ উইকেটের অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। যদিও ম্যাচের পুরস্কার বিতরণ মুহূর্তে তামিম ইকবালের চোখমুখ দেখে মনে হচ্ছিল- এই জয় তার কাছে বিশ্বাস করা কঠিন।

বাংলাদেশ দলের এই ওয়ানডে অধিনায়ক বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, ৪৫ রান তুলতে ৬ উইকেট হারানোর পর ভাবিনি জিততে পারবো। আফিফ হোসেন ও মেহেদি মিরাজের অবিশ্বাস্য দু’টি ইনিংসের কারণে খুব খুশি লাগছে। আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ দারুণ, কিন্তু মেহেদী ও আফিফ খুব ভালো করেছে। আশা করি, এর মধ্য দিয়ে তারা আরও অনেক অবিশ্বাস্য সব ইনিংস খেলার শুরুটা করে দিল।’ যদিও এর আগে, ৬ উইকেট হারিয়ে কঠিন মুহূর্তে ড্রেসিংরুমে সাকিব-তামিমদের মন খারাপের চিত্র দেখা যায়।

এদিন ‘সাগরিকা’খ্যাত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ৪৯.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে সফরকারী দল জড়ো করে ২১৫ রান। জবাবে ২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। ফজল হক ফারুকির লেন্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শুরুতে আম্পায়ার সাড়া দেয়নি। আফগানিস্তান রিভিউ নিলে ফল তাদের পক্ষে যায়। মাত্র ১ রান করেন লিটন। লিটন দাসের পর একই ওভারে বিদায় নেন তামিম ইকবাল। লিটনের বিদায়ের ১ বল পর এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক তামিম। প্রথমে আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নিলে এটিও পক্ষে যায় আফগানিস্তানের। তিনি ৮ বলে ৮ রান করেন।

তামিম-লিটনের বিদায়ের পর শুরুতেই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই চাপ আরও বেড়ে যায় মুশফিকুর রহিম আউটে। মুশফিকুর রহিমকেও সাজঘরে ফেরান ফজল হক ফারুকি। আউট হবার আগে ৫ বলে ৩ রান করেন। পাঁচ ওভার শেষ না হতেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগার বাহিনী। এরপর রানের খাতা খোলার আগেই বোল্ড হন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বি। ফজল হক ফারুকির লেন্থ বল বুঝতেই পারেননি ইয়াসির। ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন, বল ব্যাট মিস করে উড়িয়ে দেয় স্ট্যাম্প। মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুজিব উর রহমানের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হলেন সাকিব আল হাসান। ১৫ বলে ১০ রান করেন তিনি।

বোলিং করতে এসেই সাফল্য পেয়ে যান রশিদ খান। দ্বিতীয় বলে তিনি ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। ৮ রান করে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর ক্রিজে আফিফ হোসেনের সঙ্গী হন মেহেদি হাসান মিরাজ। এটিই ছিল বাংলাদেশের শেষ ভরসার জুটি।  মূলত স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব-মেহেদি হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটের জুটিতে রেকর্ড গড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুইজনে যোগ করেন ১৭৪ রান। ওয়ানডে ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ জুটি। এর আগে ১২৭ রান ছিল ইমরুল কায়েস-সাইফ উদ্দিনের। তারা ২০১৮ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই জুটি গড়েছিলেন। আজ তাদের পেরিয়ে গেছেন আফিফ-মিরাজ। দুইজনের ১৭৪ রানের এই জুটিতে ৭ বল বাকি থাকতেই জয়ের হাসি হেসেছে বাংলাদেশ। আফিফ হোসেন ধ্রুব ১১৫ বলে ৯৩ রান ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১২০ বলে ৮১ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে, টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান দলপতি হাসমাতুল্লাহ শহীদি। ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই আফগান ওপেনার রহমতুল্লাহ গুরবাজকে বিদায় করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই বাঁহাতি পেসারের দ্বিতীয় ওভারে মিড উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন গুরবাজ(৭)।

ষষ্ঠ ওভারে ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে ক্যাচ তুলে দেন আফগানিস্তানের ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। সেই ক্যাচটি তালুবন্দি করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে গুরবাজ ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৯ রান করে এই ব্যাটার শরিফুলের বলে ইয়াসির আলী রাব্বির দারুণ এক ক্যাচে ফেরেন।

দলীয় ৫৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলা আফগানিস্তানের রানের চাকা সচল রাখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন রহমত শাহ। কিন্তু তিনে নামা এই ব্যাটারকে ইনিংস দীর্ঘ করতে দিলেন না তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি এই টাইগার পেসারের বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরার আগে রহমত ৬৯ বলে ৩৪ রান করেন।

আফগান শিবিরে চতুর্থ ধাক্কা দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পার্ট-টাইম এই স্পিনার ম্যাচে প্রথমবার বল হাতে নিয়ে তুলে নেন হাশমতুল্লাহ শহীদির উইকেট। রিয়াদের স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরার আগে সফরকারী দলের অধিনায়ক ৪৩ বলে করেছেন ২৮ রান। এরপর নবি ও নজিবুল্লাহ মিলে গড়েন ৬৩ বলে ৬৩ রানের জুটি। ৩৯তম ওভারে নবিকে ২০ রানে বিদায় করে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

নবি গেলেও বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে ছিলেন নজিবুল্লাহ। মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ফিফটিও তুলে নেন এই আফগান ব্যাটার। তবে অন্যপ্রান্তে ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল। এর মধ্যে সাকিবের এক ওভারে পড়ে ২ উইকেট। ইনিংসের ৪৫তম ও সাকিবের নবম ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন গুলবাদিন নাইব (১৭)। ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন রশিদ খান (০)।

৪৬তম ওভারে মুস্তাফিজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মুজিব উর রহমান (০)। ৪৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে চতুর্থ বলে জাদরানকে বিদায় করেন শরিফুল। বাঁহাতি পেসারের বলে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ তুলে দেন ৮৪ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬৭ রান করেন জাদরান। শেষ ওভারে ফের মুস্তাফিজের আঘাত। এবার ইয়ামিন আহমাদজাইকে (৫) লং অনে রিয়াদের ক্যাচে পরিণত করে আফগানদের অলআউট করে দেন ফিজ। বল হাতে ৩টি উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। ২টি করে উইকেট গেছে শরিফুল, তাসকিন ও সাকিবের দখলে। বাকি একটি মাহমুদউল্লাহর।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন