আট হাজার টাকার বিশেষ প্যাকেজে ঝর্ণাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্টে ওঠেন মামুনুল হক। ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে রয়েল রিসোর্টের ম্যানেজার নাজমুল হাসান অনি এ কথা বলেন।
রিসোর্টকাণ্ডে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের নামে দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় দ্বিতীয় দফায় সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা হলেন- রিসোর্টের অভ্যর্থনা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান অনি, সুপারভাইজার আবদুল আজিজ পলাশ ও আনসার সদস্য রতন বড়াল। এ সময় বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুজ্জামান রাকিব।
এর আগে সকাল পৌনে ১০টায় কঠোর নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয় তাকে। পরে ২টায় আবার তাকে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) নাজমুল হাসান জানান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন ৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরবর্তী সাক্ষ্যের দিন পরে জানানো হবে। দুপুর ২টায় সাক্ষ্য শেষে মামুনুল হককে ফের কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাকিবুজ্জামান রকিব জানান, কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন। সেই মামলায় এ নিয়ে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সাক্ষীকে উভয় পক্ষ জেরা করেছে।
সাক্ষীরা আদালতকে বলেন, ‘ওই দিন রিসোর্টে বিশৃঙ্খলার পর ওই নারীর কী সম্পর্ক জানতে চাইলে তাকে স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল। তবে এই বিষয়ে বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যদের সামনেই মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নারী বিয়ের প্রলোভনে রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে সবার সামনে ওই কথা স্বীকারও করেন মামুনুল হক।’
এর আগে ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে ‘কথিত’ দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল। তার আগে ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
মামুনুল হক ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
পরে ৩০ এপ্রিল সকালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। যাকে মামুনুল হক তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছিলেন।