ঢাকার নিম্ন আদালতের এজলাস থেকে আসামিদের জন্য বানানো লোহার খাঁচা সরানো শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ২৮ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে লোহার খাঁচা সরানোর কার্যক্রম শুরু করা হয়।
শনিবার (১৭ আগস্ট) আদালত সূত্রে জানা গেছে, আদালত থেকে লোহার খাঁচা সরানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তবে সুপ্রিমকোর্ট থেকে এখনও এ সংক্রান্ত কোনও চিঠি আসেনি। পর্যায়ক্রমে সব আদালত থেকে লোহার খাঁচা সরানো হবে।
এদিকে ঢাকার ২৮ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ছাড়া অন্য কোনও আদালত থেকে আসামিদের জন্য তৈরি লোহার খাঁচা সরানো হয়নি বলে জানিয়েছেন একাধিক কোর্টের পেশকার, পাবলিক প্রসিকিউটররা। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক পেশকার ও পাবলিক প্রসিকিউটর বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত লোহার খাঁচা সরানোর জন্য কোনও চিঠি আসেনি৷ নির্দেশনা আসলে লোহার খাঁচা সরানো হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিতে গেলে বিচার চলাকালে তাকে লোহার খাঁচার ভেতর দাঁড়াতে হয়। সে সময় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। গত ১৫ জুলাই হাজিরা দিয়ে আদালত অঙ্গনে সাংবাদিকদের ড. ইউনূস বলেন, ‘লোহার খাঁচার তৈরি আসামির কাঠগড়া আদালত থেকে তুলে নেওয়া উচিত।’
ওই সময় ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আদালতে খাঁচার বিষয়টা আমি বারে বারে বলতে থাকব। এটা জাতির প্রতি একটা মস্ত অপমান। এ অপমান আমাদের সহ্য করা উচিত না। বিচার বিভাগের প্রতি আবেদন জানাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাঁচাগুলো সরিয়ে ফেলেন। এটা মানবতার প্রতি অপমান। কেন মানুষকে পশুর মতো খাঁচায় ভরে রাখবে?’
অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর খাঁচা সরানোর কাজ শুরু হলো। আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, গণপূর্ত বিভাগের লোকজন লোহার খাঁচা সরানের কাজটি করছেন।
গত ১০ বছর যাবত ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালত বাদে অন্যান্য আদালতে গ্রেফতারের পর কাউকে হাজির করা হলে কিংবা বিচারাধীন মামলায় হাজিরা দিতে গেলে এজলাস কক্ষের এক পাশে থাকা লোহার খাঁচায় ঢুকতে হতো। এ নিয়ে বহু লেখালেখি হলেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি।