সেই সঙ্গে সাধারণ কারাবন্দিদের ক্ষেত্রে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরানো সংক্রান্ত কারা আইন, ১৮৯৪-এর ৪৬, ৫৬ ও ৫৮ ধারা এবং কারাবিধির ৪৮৪, ৪৮৫, ৪৮৬, ৭০৮, ৭১৮-৭২১ বিধির নির্বিচার ও অকারণ প্রয়োগ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কায়সার কামালের জনস্বার্থে করা রিটের প্রাথমিক শুনানির পর সোমবার এ রুল দেন বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ।
স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও শরীয়তপুরের পালং থানার ওসির কাছে রুলের জবাব চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলেছেন আদালত। গাজীপুর ও শরীয়তপুরের দুই বিএনপি নেতাকে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে তাদের মায়ের জানাজায় হাজির করানো নিয়ে প্রকাশিত খবর যুক্ত করে গত বৃহস্পতিবার এ রিট আবেদনটি করা হয়।
আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ দুটি ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ সালের। এটার পরিবর্তন দরকার। এ কারণে জনস্বার্থে রিট করি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।’
গত ১৫ জানুয়ারি মা নাছিমা বেগমের মৃত্যু হলে ওই দিনই গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক শরীয়তপুর সদর উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সীর ছেলে সেলিম রেজা। কিন্তু তাকে হাতকড়া আর ডাণ্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা পড়তে হয়।
সেলিম রেজাকে গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার মাসখানেক আগে একই ঘটনা ঘটে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলী আজমের ক্ষেত্রেও। কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তার মা সাহেরা বেগম মারা যান। শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে ১৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের দপ্তরে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম।
কিন্তু ওই দিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় ২০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজায় উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরো সময় হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন আলী আজম।