কক্সবাজারের টেকনাফে সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থী শিপ্রা রানী দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত। তদন্তকারীরা বলছেন, তদন্তের স্বার্থে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। তদন্তকারী সংস্থা র্যাব এই দুই শিক্ষার্থীর জামিনের ব্যাপারে আইনজীবীর মাধ্যমে সহায়তা দেবে।
সিনহা রাশেদ নিহত হওয়ার পর কক্সবাজারের এসপি এ বি এম মাসুদের সঙ্গে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফোনালাপের ব্যাপারেও তদন্ত করবে র্যাব। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি আলামত যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এদিকে হত্যা মামলায় পলাতক দুই আসামির (পুলিশ সদস্য) হদিস মিলছে না। এজাহারে উল্লেখ করা নাম অনুযায়ী তাঁরা দুজন হলেন এসআই টুটুল ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও এজাহারে তাঁদের কোনো ঠিকানা উল্লেখ নেই। বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্র ও টেকনাফ থানায় এই নামে কোনো সদস্য থাকার তথ্য গতকাল পর্যন্ত মেলেনি। র্যাবের তদন্তকারীদের কাছে পুলিশ দাবি করছে, এই নামে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে কেউ কর্মরত নেই। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী বলছেন, সোর্সের মাধ্যমে জেনেই যাঁরা ছিলেন তাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে। এসব নামে বা ভিন্ন নামের কেউ ছিলেন কি না, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘র্যাব প্রভাবমুক্ত থেকে মামলাটির তদন্ত করতে চায়। এ ক্ষেত্রে তদন্তে দুটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমত, হত্যায় জড়িদের চিহ্নিত করা। দ্বিতীয়ত, হত্যার মোটিভ বের করা। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য ও আলামত পর্যালোচনা করা হবে। সিনহা রাশেদের সঙ্গী সিফাত ও শিপ্রা ভিন্ন দুটি মামলায় জেলহাজতে আছেন। আইনজীবীর মাধ্যমে তাঁদের জামিন নেওয়ার ব্যাপারে আমরা সহায়তা করব। জামিন মিললে তদন্তের প্রয়োজনে শিপ্রা ও সিফাতকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
এসপির সঙ্গে প্রদীপ ও লিয়াকতের প্রকাশ পাওয়া ফোনালাপের ব্যাপারে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া ওই ফোনালাপ র?্যাবের নজরে এসেছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই সাপেক্ষে তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আরো জানতে পেরেছি যে পলাতক দুই আসামি পুলিশ সদস্য। এ বিষয়ে আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেছে যে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে এই নামে কোনো পুলিশ সদস্য নেই। বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তারা আরো যাচাই-বাছাই করবেন।’
তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা গতকাল বলেন, সোর্সের মাধ্যমে জেনে মামলার এজাহারে ৯ জনের নাম দেওয়া হয়েছে। সাতজনের নাম পাওয়া গেলে বাকি দুজনের নাম না পাওয়ার তো কথা নয়। ভিন্ন নামের লোকও সেখানে থাকতে পারে। আবার এজাহারে পুরো নাম না-ও আসতে পারে। লোকাল পুলিশ এখন বিবাদীপক্ষ। তারা কী বলছে, তা আমরা দেখব না। তদন্তকারীরা তদন্ত করে দেখুক। তারা না পেলে বুঝব ভুল ছিল। অন্য আর কেউ জড়িত না থাকলেও মামলায় কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না।’
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন