রুমা আক্তার নামে এক গার্মেন্টস শ্রমিককে বিয়ের প্রলোভনে অপহরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলা থেকে একাধিক হত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণসহ ১১ মামলার আসামি আলোচিত লেডি কিলার রসু খাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী এ রায় দেন।
অপহরণের শিকার রুমা আক্তার রাজধানীর উত্তরায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার পাঁচরুকী গ্রামে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ৬ ডিসেম্বর রসু খাঁ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রুমা আক্তারকে চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়নে মামার বাড়িতে নিয়ে আসেন। রুমা এখানে এসে দেখেন, রসুর আগের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। তখন রুমা আর রসু খাঁর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর রাতে রুমাকে ঢাকায় নেওয়ার কথা বলে রসু খাঁ ওই ইউনিয়নের চাপিলা বিলের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। রুমার চিৎকার আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রসু খাঁ পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা রুমাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে রুমার বাবা মো. গিয়াস উদ্দিন চাঁদপুরে আসেন এবং মেয়ে সুস্থ হওয়ার পর ২০০৫ সালের ৬ জানুয়ারি চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বিয়ের প্রলোভনে অপরহণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় রসু খাঁকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদুর রহমান তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ২৯ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১৮ বছর আদালতে বিচারাধীন ছিল। এসময়ে আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্য ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় রোববার এ রায় দিলেন আদালত।
রসু খাঁর নামে নারীদের হত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণসহ ১১টি মামলা হয়। এর মধ্যে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড, দু’টিতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আর ছয়টি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন দেবাশীষ রায় ও এবং সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটার (এপিপি) ছিলেন খোরশেদ আলম শাওন।
এর আগে ১১ জন নারীকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রসু খাঁ। খুন হওয়া নারীদের সবাই পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাদের বয়স ছিল ১৭ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।