বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করে পঙ্গু করার অভিযোগে নাঙ্গলকোট থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ভুক্তভোগী দৌলখাড় গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন মামলাটি করেন। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন নাঙ্গলকোট উপজেলার দৌলখাড় ইউনিয়নের বাম গ্রামের পন্ডিত বাড়ি এলাকার আলী হায়দারের সন্তান। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন জানান, ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে নাঙ্গলকোটে নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় বেলায়েত হোসেন নামে আরো একজনকেও সাথে নিয়ে নাঙ্গলকোটের লুধুয়া নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে নাঙ্গলকোট থানার তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলাম দুইজন পুলিশ সদস্যকে পায় গুলি করতে বলেন। তারা গুলি করতে রাজি না হলে ওসি নজরুল ইসলাম নিজেই আমাদের দুইজনকেই বাম পায়ের হাঁটু বরাবর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার দেখানো হয়। এ মামলায় এক বছর কারা ভোগ করতে হয়েছে।
মুয়াজ্জিন বেলাল আরো বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকাকালীন সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে ঢাকা রেফার করা হলেও ওসি নজরুল ইসলাম তা হতে দেননি। যে কারণে চিকিৎসার অভাবে আমার পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অন্যায় আচরণ ও মিথ্যা মামলা দায়ের করে যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আমি তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলামসহ পুলিশের সাত সদস্য, নাঙ্গলকোট উপজেলার তৎকালীন চেয়ারম্যান ও তৎকালীন পৌরসভার মেয়রসহ মোট ৩১জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছি। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আমি আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো।
মামলার আইনজীবী বদিউল আলম সুজন জানান, নির্যাতন ও হেফাজতের মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আমরা আশা করছি বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে নির্দেশনা প্রদান করবেন।