চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের একটি আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
মিতু হত্যার ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার ছয় বছর আগে যে মামলা করেছিলেন, তাতে তাকেই প্রধান আসামি করে আজ ২ হাজার ৮৪ পৃষ্টার অভিযোগপত্র দিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। মেট্রো অঞ্চলের সুপার নাঈমা সুলতানার নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তাসহ পিবিআই এর একটি দল আদালতে গিয়ে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
নাঈমা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, মোট সাতজনকে এই মামলার অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে আমরা বাবুল আক্তারকে আসামি হিসেবে পেয়েছি। আমরা আগে বারবার বলেছি হত্যাকাণ্ড কেন হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর আমরা তদন্ত করেছি। ১ নম্বর আসামি বাবুল আক্তার কীভাবে জড়িত তা আমরা পেয়েছি।
অন্য আসামিদের নাম জানতে চাইলে নাঈমা সুলতানা বলেন, তদন্ত করে যাকে আসামি পেয়েছি, তাদেরই অভিযুক্ত করেছি। বিচার প্রক্রিয়ায় গেলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। নো মোর কমেন্টস।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার এডিসি কামরুল হাসান বলেন, আমরা পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছি। সংশ্লিষ্ট আদালত এটা দেখবেন। আগামী ১০ অক্টোবর এ মামলার ধার্য দিন আছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন সে সময় পুলিশ সুপার পদে থাকা বাবুল আক্তার। মিতু হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে ২০২১ সালের ১২ মে তার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর সেদিনই বাবুলসহ ৯ জনকে আসামি করে নতুন হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন।
আইনি জটিলতার কারণে এ বছরের ২৫ জানুয়ারি মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৬ মার্চ সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে বাবুলের করা মামলার তদন্ত শেষ করতে বলেন আদালত। বাবুল আক্তার এখন নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।