কুড়িগ্রাম সীমান্তে আলোচিত ফেলানী হত্যাকাণ্ডের আজ ১১ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১১ বছর পার হলেও আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য এখনও শেষ হয়নি। সেদিন ভোরে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় ১৪ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে মারে অমিয় ঘোষ নামের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক সদস্য।
ঘটনার পর তার লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলেছিল ৫ ঘন্টা। ৩০ ঘন্টা পর বিএসএফ লাশ ফেরত দিলে নাগেশ্বরী উপজেলার কলোনীটারী গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছিল। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
ওই দিন ভারতের ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনস্ত চৌধুরীহাট বিওপির কোম্পানী কমান্ডারের এফআইআর-এর ভিত্তিতে ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করা হয় ( জিডি নং-৩৪৯)। পরে এরই ভিত্তিতে ওই দিন একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয় (মামলা নম্বর-৫/১১)।
এদিকে এই নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চাপের মুখে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট কুচবিহারে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টের বিচার এবং পূণর্বিচারে ফেলানী হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে খালাস দেয়া হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট ফেলানী হত্যা মামলার পুনঃবিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মাসুম সম্পাদক কিরিটি রায় এবং ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম যৌথভাবে রিট আবেদন দাখিল করেন। আবেদনের হলফনামায় কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন স্বাক্ষর করেছিলেন।
তিনি জানান, একাধিকবার তারিখ বদলের পর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামানা ও বিচারপতি মোহন এম সান্তনা গৌদ্ধারকে নিয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য আইটেম নম্বর-৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। অথচ সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিবাদীদের শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা শোকজের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে শুনানি হয়নি। বর্তমানে কার্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে আছে রিটটি। করোনার কারণে রিটটির সর্বশেষ অবস্থাও এখন জানেন না তিনি।