সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুদক উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এসব ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। তিনি বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন বলে সন্দেহ করছেন দুদকের কর্মকর্তারা। প্রাথমিক তথ্য যাচাইয়ের পর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
দুদকে আসা আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা করেছেন। এরমধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। বর্তমানে হিসাবগুলোতে ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে। এছাড়া পরিবারের চার সদস্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন ১২টি। এই কার্ডগুলো দিয়ে ২৮ লাখ টাকার বেশি লেনদেন করেছেন।
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ৯১টি। এসব হিসাবে ২৪৯ কোটি টাকা জমা হয়। এরমধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি ১৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন। এসব হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়। এরমধ্যে তিনি ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন।
তাদের তিন মেয়ের ব্যাংক হিসাবেও মোটা অঙ্কের অর্থ জমা হওয়ার তথ্য মিলেছে প্রতিবেদনে। সেখানে আদিবা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাইম খানের অ্যাকাউন্টে ৬১ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব অর্থের সিংহভাগই তারা উত্তোলন করে নিয়েছেন। এছাড়াও নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি হিসাবে জমা হয়েছে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে পুরো টাকাই তিনি উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে মাত্র ২১ লাখ টাকা জমা আছে।