খুলনার বয়রা কলেজ বাউন্ডারী রোড এলাকায় জেসমিন নাহার নামে এক তরুণীকে হত্যায় তার প্রেমিক আসাদউজ্জামান সরদার ওরফে আরিফকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিল। তিনি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল সরদারের ছেলে। রবিবার খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, ২০১৩ সালে ২৯ নভেম্বর বিকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ ছিলেন জেসমিন নাহার। তিনি বয়রা সরকারি মহিলা কলেজ বাউন্ডারী রোড এলাকার বাসিন্দা রাশেদ মল্লিকের ছোট মেয়ে।
দুই দিন পর ১ ডিসেম্বর সকালে বয়রা দাসপাড়া এলাকার একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে পলিথিনে মোড়ানো বস্তার মধ্যে জেসমিনের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১০ জুন আসাদউজ্জামানসহ চার জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এসআই পলাশ গোলদার।
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের ছয়মাস আগে আসাদউজ্জামানের সাথে জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৩ সালে ২৯ নভেম্বর বিকালে আসাদউজ্জামানের সাথে দেখা করতে বয়রা বন বিভাগ অফিসের সামনে আসে। সেখান থেকে জেসমিনকে সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহরের বাড়িতে নেয়া হয়।
সেখানে আসাদউজ্জামান তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে গ্রিলের সাথে ধাক্কা দেওয়া হয়। আঘাতে জেসমিনের মাথা-নাক ফেটে যায়। এ সময় চিৎকার করলে জেসমিনের মুখ চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। পরে পাটের তৈরি বস্তা ও নীল রং এর পলিথিন দিয়ে লাশ পেঁচিয়ে হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের কবরস্থানে ফেলে দেয়া হয়।
মামলায় তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় অভিযুক্ত আব্দুল হালিম গাজী, শেখ ফরহাদ আহমেদ, অনুপম মহলদার ও সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহরকে খালাস দেওয়া হয়।