সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালানোর পর থেকে এখন অব্ধি বহু সংখ্যক প্রভাবশালী মন্ত্রী আমলা, নেতাকর্মী ও কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলাও হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত শুধু শেখ হাসিনার নামেই ১০০টির বেশি মামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে হত্যা, গণহত্যা এবং অপহরণের মত মামলা রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
গত এক মাসের পরিসংখ্যানে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এ কে এম শহীদুল হককে সর্বশেষ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, একই সময়েই ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও গত ২৯ আগস্ট সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যরা দেশত্যাগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
যেমন, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে বিমানবন্দর থেকে আটকের কিছুক্ষণ পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে আটক করা হয়। এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের আটক করে।
যদিও পরে আবার পলক, সৈকত ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে একই দিনে খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সম্পর্কে এখনও কিছু জানায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এছাড়াও বিমানবন্দর থেকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদকেও আটকের খবর আসে। তবে, তাদেরকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো ধরণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে এখন পর্যন্ত যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মণি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুধু বিগত সরকারের মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দই নয়, সাবেক অনেক কর্মকর্তাও আটক হয়েছেন এই এক মাসে। এদের মধ্যে সেনা কর্মকর্তা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান অন্যতম আলোচিত একটি নাম। এর আগে সরকার পতনের পর তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, যিনি এক সময় র্যাবে কর্মরত ছিলেন, তাকেও আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এদিকে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের বহুসংখ্যক নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, গুমসহ অন্যান্য মামলা করা হয়েছে।