জহিরুল ইসলাম মিশু: প্রায় সাত বছর পর বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় খালাস পেয়েছেন একজন। বুধবার (৩০ মার্চ) সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)।
আর খালাস পেয়েছেন বিতর্কিত ব্লগার সাফিউর রহমার ফারাবী। ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু জানান, রায় ঘোষণার সময় আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং সাফিউর রহমান ফারাবী উপস্থিত ছিলেন।
এদের মধ্যে আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক। এছাড়া আরেক আসামী মান্নান ইয়াহইয়া ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আদালত সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
২০১৫ সালের ১২ মে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে নগরীর সুবিদবাজারের নুরানি আবাসিক এলাকার বাসা থেকে কয়েকশ’ গজ দূরে অনন্ত বিজয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দায় স্বীকার করেছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার বাংলা টিম। নিহতের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদি হয়ে অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।
২০১৭ সালের ৯ মে সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। এদের মধ্যে দুই জন কারাগারে ও তিনজন পলাতক রয়েছে। অপর আসামি মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী গ্রেপ্তার হলেও কারান্তরীণ অবস্থায় মারা যান। আদালতে মান্নান স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন।
২০১৭ সালের ২৩ মে অভিযোগ গঠনের পর ২০২০ সালে বিচারার্থে মামলা সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। অন্যদিকে আসামিপক্ষে তিনজন সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করেন। ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ফারাবীকে ইতিপূর্বে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হামলায় নিহত বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।