ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে না সরানোয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, এসব ‘অবজেকশনেবল’ ভিডিও সরানোর সব ক্ষমতা বিটিআরসি কর্তৃপক্ষের আছে। কিন্তু তারা তা না করে বসে বসে এসব ভিডিও উপভোগ করছে। গতকাল রবিবার চিত্রনায়িকা পরীমনি ও পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের ভিডিও অপসারণে করা রিটের শুনানিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, বিটিআরসি কী করে? প্রত্যেকবার তাদের ডিরেকশন দিয়ে এসব ভিডিও বন্ধ করতে হবে? বিটিআরসি এ ভিডিও কি সংরক্ষণ করে? এগুলো (ভিডিও) কি দেখতে তাদের ভালো লাগে? আমরা সন্তান-সন্ততি নিয়ে থাকি না? আমাদের ফ্যামিলি আছে না? কিছু হলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল হওয়ার আগেই তো বিটিআরসি অবজেকশনাবেল ভিডিও রিমুভ করতে পারে। বিটিআরসি তো সঙ্গে সঙ্গেই স্টপ করে দিতে পারে। বিটিআরসি বসে বসে এগুলো উপভোগ করে। সমাজটা উচ্ছন্নে যাচ্ছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাসমিয়া নুহিয়া আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
রিটকারী আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘আপনারা সবাই আসেন আমাদের ঘাড়ে বন্ধুক রেখে গুলি করার জন্য। আপনারা বলেন, বিটিআরসির প্রতি ডিরেকশন দিতে। কেন দেব আমরা? আমরা তো আলজাজিরার রায়ে পরিষ্কারভাবে বলেছি, এগুলো বন্ধ করার সমস্ত পাওয়ার বিটিআরসির আছে। তারপরও আপনারা আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। আমরা এখন যদি বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে আদালতে হাজির হতে বলি, তিনি এসে কারণ বলুক কেন এমন করছেন। কী কারণে ওখানে বসে আছেন। তাদের তো ক্ষমতা আছে এসব বন্ধ করার। আলজাজিরার মামলায় আমরা ছয়জন অ্যামিকাস কিউরি রেখেছিলাম। বিটিআরসির এমনিতে ক্ষমতা আছে। তারপরও আমরা স্পেসিফিক গাইডলাইন করে দিয়েছি। তারপরও কি আমরা তাদের প্রতিদিন নির্দেশনা দেব?’
এরপর আদালত রিট করার আগে ভিডিও সরাতে বিটিআরসিকে লিগ্যাল নোটিশ না দেওয়ায় রিট আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
আইনজীবী তাসমিয়া নুহিয়া আহমেদ বলেন, দ্রুতই বিটিআরসিকে লিগ্যাল নোটিশ দেব। নোটিশের কপি সংযুক্ত করে হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন করব।