ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাজধানীতে দিনভর ঝড় ও বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে পৃথক স্থানে চার জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা ও বাড্ডা থানা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- খিলগাঁও রিয়াজবাগ এলাকার রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া রাকিব (২৫), খিলগাঁও সিপাহীবাগে রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া মরিয়ম বেগম (৪৫), যাত্রাবাড়ীতে টিনের প্রাচীর স্পর্শ করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া লিজা আক্তার (১৬) ও অপরজন বাড্ডার বাসিন্দা। তবে তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার (২৭ মে) তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত মরিয়মকে হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশি মো. নাহিদ নামে এক যুবক জানান, রাত ৯টার দিকে খিলগাঁও সিপাহীবাগ আইসক্রিম গলির মক্কা টাওয়ারের পাশে একটি রাস্তায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মরিয়ম নামে ওই নারী। রাস্তাটিতে বৃষ্টির কারণে হাঁটু সমান পানি জমেছিল।
তাদের ধারণা, সেখানে বিদ্যুতের কোন তার ছিড়ে পড়েছিল বা বৈদ্যুতিক খুঁটি বিদ্যুতায়িত হয়েছিল। আর সেখান থেকেই ওই নারী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
তিনি জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই নারীকে পানিতে পড়ে থাকতে দেখে তিনি এবং স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত গোষণা করেন। একই স্থানে কিছুদিন পরপরই এমন দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন তিনি।
মৃত মরিয়মের ছেলের বন্ধু তুহিন জানান, মরিয়মের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। পরিবার নিয়ে থাকেন খিলগাঁও মেরাদিয়া কবরস্থান গলিতে।
স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। রাতে গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরেন। এরপর ছেলে ইয়ামিনকে খুঁজতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপরই রাস্তায় এই দুর্ঘটনার শিকার হন।
এদিকে, রাকিবকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার সহকর্মী খোকন মিয়া জানান, রাকিবের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায়। তারা খিলগাঁও রিয়াজবাগ ৬ নম্বর গলিতে একটি রিকশার গ্যারেজে থাকেন।
ওই এলাকায় তারা রিকশা চালান। রাতে বৃষ্টির কারণে তাদের রিকশার গ্যারেজে পানি জমে ছিল। সেই পানির মধ্যে রিকশা রেখে ব্যাটারি চার্জ করছিলেন রাকিব। সেই চার্জার খুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি।
অপরদিকে, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লিজার বোন মরিয়ম জানান, লিজা আক্তার যাত্রাবাড়ী থানাধীন দরবার শরীফ সামেদ ভূইয়ার বাসার ভাড়া থাকেন।
তিনি বাসার পাশে টিনের প্রাচীর স্পর্শ করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে রাত সাড়ে ১০টায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লিজা নোয়াখালী জেলার চরজব্বার উপজেলার মো. সিরাজ খানের মেয়ে।
ঢামেক হাসপাতালের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সবার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।